ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

মানবাধিকার সমুন্নত করতে সরকার কাজ করছে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৯
মানবাধিকার সমুন্নত করতে সরকার কাজ করছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম (ফাইল ছবি)

ঢাকা: বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত করতে বর্তমান সরকার অবিরাম কাজ করছে, এটা বাংলাদশের ইতিহাসে অন্য কেউ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম। 

তিনি বলেন, মানবাধিকারে সোচ্চার ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে সরকারের ন্যূনতম কোনো বাধা নেই। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে চাই একজন নাগরিকেরও মানবাধিকার যেন লঙ্ঘন না হয়।

আমরা সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

মন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার ব্যাথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানেন। তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হলো, তিনি বিচার পাননি। পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ পুড়িয়ে সারাদেশ বার্ন ইউনিটে পরিণত করে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিলো। সে জায়গা থেকে আজ আমাদের উত্তরণ হয়েছে।

শনিবার (২৩ মার্চ) সকালে ঢাকার শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে মাসিক মানবাধিকার খবর-এর ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক, সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। অথচ এই বাংলাদেশই ছিলো দরিদ্রতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটা মডেল। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ কল্পনাতীত জায়গায় পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশের কোনো প্রান্তে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসার অভাবে আছেন, এমন একজন মানুষ পাওয়া যাবে না। নাগরিকের মৌলিক অধিকারকে সমুন্নত করার জন্য বর্তমান সরকার অর্থাৎ শেখ হাসিনা সরকার কাজ করে চলেছে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন মানুষের সাংবিধানিক অধিকার হচ্ছে তার মানবাধিকার। সংবিধান নাগরিককে যে অধিকার দিয়েছে সে অধিকার থেকে তিনি যদি বঞ্চিত থাকেন, তাহলে তিনি মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত হন।

বাংলাদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি ছিলো উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স-এর মতো নিকৃষ্ট, জঘন্য, ঘৃণ্য অর্ডিনেন্স ১৯৭৯ সালে পার্লামেন্টে পাস করে সেটাকে আইনে পরিণত করা হয়, সংবিধানের অংশ করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৭৫ এর ১৫ই আগস্টে যারা নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন তাদের খুনীদের বিচারের পথ রুদ্ধ করা হয়েছিলো। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে জাতির কাঁধে কলঙ্ক হয়ে থাকা এই আইন অপসারণ করে জাতির জনকের খুনীদের বিচার করেছেন।  

মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে হত্যার পর ৩১ ডিসেম্বর সব যুদ্ধাপরাধীদের জেল থেকে বের করে দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের দম্ভ চূর্ণ করে তাদের বিচার করেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে বাংলাদেশ মানবাধিকারকে সমুন্নত করেছে।

মিয়ানমারের অসহায় নিরস্ত্র মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা ও জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই বর্বোরচিত ঘটনায় মিয়ানমারের মানুষ যখন বিপন্ন হয়ে পড়েছিলো, সারা দুনিয়া তখন নির্বাক হয়ে তাকিয়েছিলো কেউ সাড়া দেয়নি। মানবাধিকারকে সমুন্নত করতে গণতন্ত্রের জননী, মানবাধিকারের জননী শেখ হাসিনা বর্ডার খুলে দিয়ে ১৬ লাখ মানুষকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়ে, তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের সুযোগ করে দিয়ে শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দিয়েছেন সারাবিশ্বে তিনিই হচ্ছেন লিডার, যিনি মানবাধিকার রক্ষায় ভূমিকা রেখেছেন।

 
‘বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের বিচার, নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার বিচার, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন, কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়, প্রমাণ করেছেন আসামির সংখ্যা বড় নয়, অপরাধটা বড়।

শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন দলের এমপিও দুর্নীতির দায়ে কারাদণ্ড পেয়েছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন অপরাধের কোনো দায়মুক্তি নেই। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশে মানবাধিকারকে সমুন্নত করার বিষয়।

মন্ত্রী তার বক্তব্যে আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ শান্তির একটি স্বর্গে পরিণত হচ্ছে। সেরকম একটি সময়ে মানবাধিকার খবর যুগান্তকারী পদক্ষেপ রাখছে। মানবাধিকার খবর-এর অগ্রযাত্রায়, ছিলাম, আছি, থাকবো।  
 
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার খবর-এর সম্পাদক ও প্রকাশক মো. রিয়াজ উদ্দিন এবং গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা ও উম্মে ফাতেমা নাজমা, প্রেস ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বেদ খান, বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মো. আব্দুর রহিম খান, প্রখ্যাত জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৯
আরএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।