ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

টাকার লোভে পরিকল্পিতভাবে বন্ধুকে হত্যা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০২ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৯
টাকার লোভে পরিকল্পিতভাবে বন্ধুকে হত্যা

মুন্সিগঞ্জ: দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর লৌমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে মুন্সিগঞ্জ পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)। মোটরসাইকেল বিক্রির টাকার লোভে পরিকল্পিতভাবে মো. সোহাগকে (২০) মুন্সীগঞ্জ থেকে খুলনায় নিয়ে গিয়ে খুন করে তার বন্ধুরা। 

শনিবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জ পিবিআই’র অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়।  

এরআগে, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকালে মরদেহ উত্তোলন করলে সোহাগের বাবা শহিদুল ইসলাম ফকির শার্টের একটি অংশ দেখে তার ছেলেকে চিহ্নিত করে।

 

সোহাগ মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার মধ্য কামারগাও গ্রামের মো. শহিদুল ইসলাম ফকিরের ছেলে। ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর বাসা থেকে বের হয়ে কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর না ফিরলে তার বাবা শ্রীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।  

শ্রীনগর থানা পুলিশ দীর্ঘ ১ বছর ৮ মাস পর তদন্ত করে অপু, পারভেজ, সিয়ামের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। এরপর সোহাগের কোনো সন্ধান না  পাওয়ায় তদন্তের জন্য পিবিআই মুন্সীগঞ্জকে হস্তান্তর করেন। ২০১৮ সালের ৩০ জুন মামলার তদন্ত শুরু করেন পিবিআই এসআই মো. হযরত আলী। এবং নয় মাসের মধ্যে তদন্ত করে চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেন।  

২১ মার্চ মামলায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামি মো. সিয়ামকে (২৭) ঢাকা দোহার এলাকা থেকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে এ ঘটনা জানা যায়।  

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি জানান, সোহাগের সঙ্গে আগে থেকেই বন্ধুত্ব ছিল সিয়ামের (২৭)। এছাড়া অপর আসামি পারভেজের বোনের শ্বশুড় বাড়ি বালাশুর গ্রামে।  

সিয়াম ও সোহাগের সঙ্গে পারভেজের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সোহাগের মোটরসাইকেল দিয়ে তারা ঘোরাফেরা করতো। সোহাগ তার মোটরসাইকেলটি বিক্রি করবে জানালে পারভেজ জানায় তার মামা কিনতে আগ্রহী। সোহাগ ও সিয়াম মাওয়া ঘাটের ওপারে মোটরসাইকেল নিয়ে গেলে পারভেজের মামার দেখানো এক লোক ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে মোটরসাইকেলটি নিয়ে যায়।  

এরপর পারভেজ সিয়াম ও সোহাগকে নিয়ে খুলনা বেড়াতে যায়। খুলনা পৌঁছে একটি হোটেলে রাত্রি যাপন করে। পরদিন তারা পারভেজের গ্রামের বাড়ি ডুমুরিয়া থানাধীন টোলনা গ্রামে যায়। সেখানে নয়ন, মুরাদ, আবিদ তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে মোটরসাইকেল বিক্রির টাকা ছিনিয়ে নিয়ে শ্বাসরোধ ও ছুরি দিয়ে পেটে, বুকে আঘাত করে হত্যা করে। হত্যার পর পাশ্ববর্তী ডোবায় কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখে।

এছাড়া, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়ন খুলনা এলাকার শীর্ষ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। সে বাকিতেও খুন করে বলে জানান এই কর্মকর্তা। থানায় একাধিক মামলাও আছে তার বিরুদ্ধে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া মরদেহের অবশিষ্টাংশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।