সোমবার (২৫ মার্চ) বিকেলে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে ও গণহত্যা দিবসের স্মরণানুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এমনটাই বলছিলেন জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
‘গণহত্যা: হাড়ের এ ঘরখানি’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লেখক ও সাংবাদিক জাহীদ রেজা নূর।
আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম, জাতীয় সংসদ সদস্য আরমা দত্ত এবং প্রজন্ম একাত্তরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. সাইদুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
স্বাগত ভাষণে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার কালরাত পেরিয়ে বাংলাদেশ একাত্তরে জেগে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের মহা-ভোরের মোহনায়। এই জাগরণকে আজ জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সত্য ও স্বার্থক করে তুলতে হবে।
প্রবন্ধিক বলেন, একাত্তরে যে শিশুটির বয়স ছিলো পাঁচ বছর, সে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সঙ্গে বড় হয়, দেশকে অতীত বিস্মৃত হতে দেখে। পাকিস্তানি দালালদের আস্ফালন দেখে এদেশে, যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী হতে দেখে, পাশাপাশি জাহানারা ইমামের গণআদালত দেখে, গণজাগরণ মঞ্চ দেখে, ঘাতকদের বিচার হতে দেখে। এক সময় সে শিশুটি উপলব্ধি করে, নশ্বর জীবনে তার আয়ু একদিন শেষ হবে, যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, তাদের সবাই একদিন মারা যাবে, কিন্তু টিকে থাকবে এই দেশটা, যার নাম বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ টিকে থাকবে, যদি এদেশের মানুষেরা যুগের পর যুগ ধরে তাদের গৌরবের মুক্তিযুদ্ধকে লালন করে। যদি এ দেশমাতৃকার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের সম্মান করেন এবং আক্ষরিক অর্থেই বুঝে বলে, ‘দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা, কারো দানে পাওয়া নয়। ’
আলোচকরা বলেন, স্বাধীনতার ঊষালগ্নে নৃশংস ও নির্মম হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে পাক হানাদার বাহিনী বাংলার আত্মাকে বিধ্বস্ত ও বিনষ্ট করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এ অঞ্চলের উদার-অসাম্প্রদায়িক-মানবতাবাদী মানুষ তাদের স্বাধীনতার অদম্য আকাক্সক্ষাকে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ নেতৃত্ব-নৈপূণ্যে বাস্তবে রূপ দিয়ে পাকবাহিনীর বর্বরতার জবাব দিয়েছে।
তারা বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে জনদাবির বাস্তবায়নকল্পে ধারাবাহিকভাবে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পাদন করে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছে। তবে কলঙ্কমুক্তির কাজ এখনও শেষ হয়নি। বহু যুদ্ধপরাধী ব্যক্তি ও সংগঠন এখনও বিচারের আওতায় আসেনি। আর সমাজের সর্বস্তর থেকে যুদ্ধাপরাধী এবং গণহত্যার দোসরেরা এখনও নির্মূল হয়নি। তাই সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি সামাজিক জাগরণ ও প্রতিরোধের মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৯
এইচএমএস/এএটি