বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল থেকে চারটি বুলড্রেজার নিয়ে এ অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ভৈরব নদের যশোর শহর অংশের ৮৪টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গতবছরের জানুয়ারি থেকে ভৈরব নদ খনন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কিন্তু শহর অংশে নদটির বেশিরভাগ জায়গা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন দখল করে রাখায় খননকাজ শুরু করা যাচ্ছিল না। নদের পাড় থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে যশোরবাসী দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলো। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন দখলদারদের উচ্ছেদ করে ভৈরব নদ খনন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক উচ্ছেদ অভিযান চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বাংলানিউজকে জানান, ভৈরব নদের যশোর শহরের কাঠেরপুল থেকে বকুলতলা পর্যন্ত ৮৪টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
এর আগে বুধবার (২৭ মার্চ) তিনজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, বিদ্যুৎ বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডেও উচ্ছেদ তৎপরতা দেখেন অবৈধ দখলদাররা। তারা রাতেই তোড়জোড় করে যতোটুক রক্ষা করা যায়, সে অনুযায়ী মালাপত্র বের করতে শুরু করেন।
যশোর জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নদের জায়গা দখল করে এবং জেলা প্রশাসন ও সড়ক বিভাগের জায়গায় গড়ে তোলা ২৯৬টি অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে একাধিকবার নোটিশ করলেও কর্ণপাত করেনি দখলদাররা।
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সায়েদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, খনন প্রকল্প শেষ হলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক ব্যাপক উন্নয়ন হবে। বিশেষ করে জলাবদ্ধতা নিরসন, কৃষিতে সেচ, নৌপথে যাতায়াত ও মালামাল পরিবহন, মৎস্য আহরণ করা সম্ভব হবে। এছাড়াও আলাদা আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে শহরে ভৈরব নদেও দু’পাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি জানান, শহর এলাকায় নদীর প্রস্থ ৩২ মিটার খনন করা হবে।
যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আওয়াল বাংলানিউজকে বলেন, ভৈরব খনন প্রকল্প বাস্তবায়নে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের কোনো বিকল্প নেই, ফলে দখলদারদের কয়েক দফায় নোটিশ করেও সাড়া না পেয়ে বাধ্য হয়ে উচ্ছেদ করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ নদী কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটি নদ-নদীর দখলদারদেরও উচ্ছেদ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১৯
ইউজি/এএটি