শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী এলাকায় র্যাব-১১ এর সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী শামশের উদ্দিন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাতে শহরের এক নম্বর লঞ্চঘাট এলাকা থেকে তরিকুলকে আটক করা হয়।
র্যাব জানায়, তরিকুল ২০০৪ সালে বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার মাধবকাঠি আহমাদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল, ২০০৬ সালে খুলনা সিদ্দিকীয়া কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম, ২০১০ সালে ঢাকার মদিনাতুল উলুম বালক কামিল মাদ্রাসা থেকে ফাজিল এবং ২০১৩ সালে কামিল পাস করেন। এরই পাশাপাশি ২০১১ সালে আহসান উল্লাহ ইউনির্ভাসিটি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে বিবিএ পাস করেন। ২০১৩ সালে এমবিএতে অধ্যায়নরত থাকাকালীন জসিম উদ্দিন রাহমানির বছিলা মসজিদে বয়ান শুনতে যেতেন। জসিম উদ্দিন রহমানির বয়ানের মাধ্যমে তার মধ্যে উগ্রবাদী চেতনা জাগ্রত হয়। ওইসময় একই মসজিদে জেএমবি নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। আব্দুল্লাহ আল মামুন তৎকালীন জেএমবির দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান ছিলেন। তার মাধ্যমে ২০১৩ সালে তরিকুল জেএমবিতে যোগদান করেন। ২০১৬ সালে বাগেরহাট জেলা পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আব্দুল্লাহ আল মামুন নিহত হলে তার স্থলে তরিকুল দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। তরিকুল দায়িত্ব পাওয়ার পর খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পিরোজপুর, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জেএমবির কর্মী সংখ্যা বাড়ানোর তৎপরতা অব্যাহত রাখেন। তরিকুলের মাধ্যমে র্যাব-১১ কর্তৃক আটক মাহবুবুর রহমান উকিল, কাইয়ুম হাওলাদার, কাউছার বিন হালিম, হামদান বিন ফিরোজ, মামদুদুর রহমান মিশু, কামরুল, ইউনুছসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ৫০ জন সদস্য জেএমবিতে যোগ দেন। এদের অধিকাংশ সদস্যকে বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আটক করে।
তরিকুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, প্রথম পর্যায়ে তিনি জেএমবির সামরিক শাখার সদস্য ছিলেন। জামালপুরের যমুনা নদীর চর, আব্দুল্লাহ আল মামুনের বাসার ছাদসহ বিভিন্ন জায়গায় জেএমবির অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতা শুরু হলে তিনি ঢাকায় এসে আত্মগোগোপন করে তার দায়িত্বপূর্ণ এলাকা দক্ষিণাঞ্চলের পাশাপাশি ঢাকা ও এর আশপাশের জেলাগুলোতে জেএমবির দাওয়াতি কাজে মনোনিবেশ করে সম্পূর্ণ নতুনভাবে সদস্য সংগ্রহ করে সংগঠনকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করেন। বর্তমানে তিনি জেএমবির দাওয়াতি শাখার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে তরিকুল আরো জানায়, তিনি জেএমবিকে পুনর্গঠিত করার জন্য অস্ত্র সংগ্রহের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। জামালপুর জেলার যমুনা নদীর চরে জেএমবির নতুন একটি প্রশিক্ষণ শিবির খোলার কথা ছিল। তার বিরুদ্ধে বাগেরহাটের কচুয়া থানায় একটি, ডিএমপি যাত্রাবাড়ী থানায় একটি, নরসিংদী সদর থানায় একটি, নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় পাঁচটি মামলা রয়েছে। যার সবগুলো সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪২ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৯
আরবি/