সিলেট নগরীর প্রধান সড়ক জিন্দাবাজার এখন দু’টুকরো। কোর্ট পয়েন্ট সংলগ্ন এলাকায় একটি কালভার্ট করতে গিয়ে পুরো রাস্তাকে দু’ভাগ করা হয়েছে।
বিনা নোটিসে রাস্তা বিচ্ছিন্ন করার কারণে দুর্ভোগে পড়ছেন শহর ও শহরের বাইরে থেকে যানবাহন নিয়ে আসা লোকজন। বিকল্প পথে চলতে গিয়েও লোকজনকে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কারণ সবগুলো সড়কের কোথাও না কোথাও খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। ড্রেন বা গর্ত করে মাটি তুলে রাখা হয়েছে রাস্তায়। এতে করে রাস্তা সরো হয়ে গেছে। তাই সকাল থেকে সন্ধ্যা এসব রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়ে নষ্ট হচ্ছে মানুষের কর্মঘণ্টা। এমনকি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সও আটকা পড়তে দেখা গেছে কোনো কোনো স্থানে।
পর্যটনের শহর সিলেটে পর্যটকরা বেড়াতে এসে এমন খোঁড়াখুঁড়ির বিপাকে পড়তে হচ্ছে সহসাই। জিন্দাবাজার সড়ক দু’টুকরো হওয়ার কারণে এক কিলোমিটারজুড়ে রাস্তায় বসেছে হকার। এতে করে ফুটপাত দিয়েও চলাচল ব্যাহত হচ্ছে পথচারীর।
সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার ছাড়াও, বারুতখানা, মিরাবাজার, সুবহানিঘাট, জেলা রোড, ধোপাদিঘীরপাড়, নয়াসড়ক, আম্বরখানা, শাহী ঈদগাহ, দরগাহ গেইট, জল্লারপাড়, শিবগঞ্জ, আম্বরখানা, চৌখিদেখি, খাসদবির, মদীনামার্কেট, সুবিদবাজার, পুরানলেন সড়কসহ ২৭টি ওয়ার্ডের অধিকাংশ সড়ক প্রশস্তকরণে চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। একইসঙ্গে বক্স কালভার্ট, বক্স ড্রেন, ইউ ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ চলছে অপরিকল্পিতভাবে। রাস্তা ও ড্রেনের কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। আগামী বর্ষার আগে কাজ সমাপ্ত করা নিয়ে খোদ সিসিক-ই শঙ্কায়। এতে বৃষ্টিতে রাস্তায় কাদা ছড়ানোর পাশাপাশি নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা দেখা দেবে, এমন শঙ্কা নগরের বাসিন্দাদের।
নগরীর পায়রা আবাসিক এলাকার তালুকদার আনোয়ারুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অপরিকল্পিতভাবে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করায় নগরীর বাসিন্দা ও বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তাছাড়া নগরের রাস্তায় কাজ করাতে হলে আগে বিজ্ঞপ্তি দিতে হয়। কিন্তু নগরের জিন্দাবাজার সড়ক বন্ধের ব্যাপারে কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়নি সিসিক।
অবশ্য নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে চলমান উন্নয়ন কাজ তরান্বিত করতে সরকারি সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা চেয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। গত ১১ মার্চ নগর ভবনে সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন তিনি। সভায় আগামী বর্ষার আগে চলমান এসব কাজ শেষ করতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সহযোগিতা চান। সবার সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করলে, সে কাজ দ্রুত শেষ করা যাবে। তাই তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিআরডি), সড়ক ও জনপথ (সওজ), বিদ্যুৎ, গ্যাস, পুলিশসহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেন।
এ বিষয়ে বাংলানিউজকে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, এখন আর নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি করা হবে না। যে কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে, তা বর্ষার আগে শেষ করার জন্য চেষ্টা চলছে। বর্ষায় যাতে মানুষের দুর্ভোগ না পোহাতে হয়, এ জন্য কাজ শেষ করতে দিনরাত চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যেকোনো মূল্যে হোক কাজ শেষ করবেন আশাবাদী তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৯
এনইউ/টিএ/এমজেএফ