ঢাকা, বুধবার, ৮ মাঘ ১৪৩১, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বনানীর আগুন: সূত্রপাত ৮ম তলার বৈদ্যুতিক শটসার্কিট

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫২ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৯
বনানীর আগুন: সূত্রপাত ৮ম তলার বৈদ্যুতিক শটসার্কিট জ্বলছে এফ আর টাওয়ার (ফাইল ছবি)

ঢাকা: বনানীর এফআর টাওয়ারের ২৩ তলা ভবনের ৮ম তলায় বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করছেন স্বরাষ্ট্র এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

রোববার (৩১ মার্চ) দুপুরে বনানীর এফআর টাওয়ারের পাশে গণশুনানি শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব ফায়জুর রহমান।

**বনানীর আগুন: জমির মালিক ও বিএনপি নেতা তাসভির গ্রেফতার

ফায়জুর রহমান বলেন, গণশুনানির মূল উদ্দেশ্য হলো আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে যাতে আমরা উত্তরণ করতে পারি।

গত ২৯ মার্চ থেকে আমাদের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। গণশুনানি তদন্ত কাজেরই একটি অংশ। আমরা জমির মালিক পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও জমা দিয়েছে। পাশাপাশি এই ভবনটি যারা নির্মাণের কাজ করেছে তারা গতকাল পর্যন্ত কোনো কাগজপত্র দেয়নি। তাদের কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য সময় দিয়েছি।

এ ঘটনায় যারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদেরও বক্তব্য নিয়েছি।

গণশুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা-ছবি-জি এম মুজিবুরসাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাধারণত এ ধরনের বহুতল ভবনে যেসব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকার দরকার, তা ছিল না। আগুন লাগার সময় ভবনে কোনো ফায়ার অ্যালার্ম বাজেনি। কখনও কোনো অগ্নি সুরক্ষার মহড়া হয়নি। ভবনের ফায়ার এক্সিট ওয়ে খুবই সরু, অনেকগুলো ফ্লোরে এক্সিট ডোর সিল করা ছিলো। এক্সিট ডোরের কোনো দিকনির্দেশক চিহ্ন ছিল না। এ কারণে আগুনের ঘটনায় ভবনে অবস্থান করা কেউ ওই ডোরটি ব্যবহার করতে পারেনি।

ভবন থেকে বের হয়ে আসার চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে গণশুনানিতে তিনি জানান, ভবনটি সম্পূর্ণ গ্লাস দিয়ে ঢাকা থাকায় আগুনের ঘটনায় যে ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়েছে সেটি বের হতে না পেরে পুরো ভবনের ফ্লোরগুলো ও সিঁড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে মানুষের বের হয়ে আসাটা কঠিন ছিল। আমরা সবার বক্তব্য শুনেছি। আরও কি কি ব্যবস্থা থাকলে তারা আরও দ্রুত বের হতে পারতো সেগুলো আমরা সুপারিশের মাধ্যমে তুলে ধরবো।

তিনি বলেন, গণশুনানিতে আমরা ৮ম তলার এক্সপ্রেক্টা এস এম টেক্সট লিমিটেডের কাউকে পায়নি। তবে এই ফ্লোরে মালিককে আমরা অফিসে ডেকেছি। তিনি কাগজপত্রসহ অফিসে এসে দেখা করবেন। তবে সামনের একজন সিকিউরিটি গার্ড পেয়েছি। তিনি জানিয়েছেন, ভবনের ৮ম তলা থেকে আগুন বের হতে দেখেছেন।

এছাড়া আমরা নিচতলা, চার, পাঁচ, নয়, ১০, ২১ ও ২২ তলার প্রত্যক্ষদর্শীদের পেয়েছি কিন্তু আটতলার কেউ আসেনি। তবে আগুনের সূত্রপাতের সরাসরি প্রত্যক্ষদর্শী কাউকে পাওয়া যায়নি।

এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গণশুনানির মাধ্যমে ২৪ জন প্রতক্ষ্যদর্শীদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।  তাদের বক্তব্য পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে ৮ম তলা থেকে আগুনের সূত্রপাতের বিষয়টি জানায় তদন্ত কমিটি।

কমিটি এই ২৪ জন প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের যাবতীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে আগামী ৩ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে বলেও জানায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৯
পিএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।