সোমবার (০১ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে খুনের বর্ণনা দিয়েছেন এ হত্যাকাণ্ডে দায়ের হওয়া মামলার আসামি নিশাত তাসনিম রূপা (১৯) ও তার প্রেমিক মোজাম্মেল হোসেন (২৩)।
আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান প্রায় ২ ঘণ্টা জবানবন্দি রেকর্ডের পর তাদের কারাগারে পাঠানোর জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন।
রূপা সিলেট সদর উপজেলার শাহপরান খিদিরপুর এলাকার শফিকুর রহমানের মেয়ে ও মোজাম্মেল হোসেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার আলমপুর গ্রামের নজির আলীর ছেলে।
এর আগে রোববার (৩১ মার্চ) রাতে টিলাগড় থেকে মোজাম্মেলকে ও নিজ বাড়ি খিদিরপুর থেকে রূপাকে আটক করে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সোমবার (১ এপ্রিল) নিহতের মা রনিফা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা (নং-০১(০৪)১৯) করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) শিপলু চৌধুরী আসামিদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে স্বেচ্ছায় দেয়া স্বীকারোক্তির জন্য আদালতে হাজির করেন।
আদালতে তাদের জবানবন্দির বরাত দিয়ে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল বাংলানিউজকে বলেন, খিদিরপুর গ্রামের শফিকুর রহমানের বাসায় গৃহ শিক্ষক ছিলেন সিলেট মদন মোহন কলেজের প্রভাষক মো. সাইফুর রহমান। নিহত শিক্ষক রূপার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়তে চেষ্টা করেন। রূপা তাতে রাজি না হওয়ায় তাকে কুপ্রস্তাব দেন। প্রতি শনিবার তার সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা করার প্রস্তাব দিতেন।
বিষয়টি রূপা তার প্রেমিক মোজাম্মেলকে জানায়। এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উভয়েই সাইফুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত শনিবার রূপা সাইফুর রহমানের প্রস্তাবে সাড়া দেয়। ওইদিন সকাল ১০টায় রূপাকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রী সেজে নগরের সুবহানীঘাট হোটেল মেহেরপুরে একটি কক্ষে ভাড়া নেয় সাইফুর।
পরিকল্পনা অনুযায়ী রূপা সাইফুরকে হোটেল কক্ষে দুধের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে পান করান। এতে অচেতন হয়ে পড়েন সাইফুর। পরে মোজাম্মেলকে খবর দেন রূপা। ওই সময় মোটরসাইকেলে করে হোটেলে পৌঁছেন তিনি। ওই কক্ষে তারা তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
দুপুর ১১টার দিকে তারা হোটেল ম্যানেজারকে জানান সাইফুর জ্ঞান হারিয়েছে। এই বলে হাসপাতালে নেয়ার জন্য তারা একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে মরদেহ দক্ষিণ সুরমায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক বাইপাস তেলিরাই এলাকায় নিয়ে ফেলে চলে যান।
রোববার (৩১ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা তেলিরাই এলাকা থেকে সাইফুর রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সাইফুর রহমান নিহত সাইফুর গোয়াইনঘাট উপজেলার ফলতইল সগাম গ্রামের মো. ইউসুব আলীর ছেলে।
তিনি মদন মোহন কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। পাশাপাশি গোয়াইনঘাটের তোয়াকুল কলেজেরও প্রভাষক ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৯
এনইউ/এমএ