এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৯ এপ্রিল (মঙ্গলবার) পাবনার শহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়াম মাঠে ছয় শতাধিক চরমপন্থি সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সুযোগ গ্রহণ করবেন। আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থি সদস্যদের আর্থিক প্রণোদনাসহ পুনর্বাসন করা হবে বলে জানা যায়।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) পাবনা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) শেখ রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় এখনও পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টি, পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টি, পূর্ববাংলা লাল পতাকাসহ বিভিন্ন চরমপন্থি সংগঠন তৎপর রয়েছে। তারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধ এবং নিজেদের দলীয় কন্দোলে খুনোখুনিতে লিপ্ত। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক অভিযানেও তাদের তৎপরতা পুরোপুরি থামছে না। যে কারণে সরকার তাদের অন্ধকার জগত থেকে আলোতে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ৯ এপ্রিল পাবনার শহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত হবে চরমপন্থি সদস্যদের আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ।
এদিন পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর, জয়পুরহাট, নওগাঁ, টাঙ্গাইল, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, খুলনা, সাতক্ষীরা, ফরিদপুর, বাগেরহাট ও যশোর জেলার প্রায় ৬০০ চরমপন্থি সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ পাবেন।
এসপি আরও বলেন, আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ৮ এপ্রিল আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থি সদস্যরা স্ব-স্ব জেলা থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে পাবনায় নিয়ে আসা হবে। এজন্য পাবনায় বাড়তি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। র্যাব, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৫০০ সদস্য মোতায়েন থাকবে।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের সমন্বয়কারী এসপি শেখ রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, আত্মসমর্পণকারী যেসব চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিচার চলতে থাকবে। এক সঙ্গে বিপুল সংখ্যক চরমপন্থি সদস্যের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে অপরাধের পরিমাণ কমে আসবে।
এছাড়া আত্মসমর্পণ করার পরও তারা নতুন করে অপরাধে জড়াচ্ছে কিনা সে বিষয়ে পুলিশের বিশেষ নজরদারি থাকবে বলেও জানান পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
২০ বছর আগে ১৯৯৯ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের কাছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার চার শতাধিক চরমপন্থি সদস্য আত্মসমর্পণ করে ছিল। সেই সময় তাদের আনসার বাহিনীতে বিশেষ আনসার হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পুনর্বাসিত করা হয়। এবারও চরমপন্থিদের আর্থিক প্রণোদনাসহ পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, বিএপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাজশাহী অঞ্চলের চরমপন্থিদের দমনে ২০০৪ সালের দিকে বাংলাভাই, শায়খ আবদুর রহমানের জঙ্গি বাহিনীকে মাঠে নামানো হয়। এর পর তারাই একের পর এক হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। পরবর্তীকালে শায়খ আবদুর রহমান, বাংলা ভাইয়ের জঙ্গিদল জেএমবি ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশজুড়ে বোমা হামলা চালায়। পরে তাদের দমনে সরকারকে বিশেষ অভিযান চালাতে হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৯
জিপি