ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বিমানবন্দর সড়কে পারাপারে প্রশংসিত পুলিশের সহায়তা

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৯
বিমানবন্দর সড়কে পারাপারে প্রশংসিত পুলিশের সহায়তা পথচারীদের রাস্তা পারাপারে সহায়তা করছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর মহাখালী থেকে বিমানবন্দর সড়কের বিভিন্ন জায়গায় জেব্রা ক্রসিং দিয়ে সড়ক পারাপারে বাড়তি নিরাপত্তা দিতে কাজ করছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ যানবাহন থামিয়ে পথচারীদের নিরাপদ সড়ক পারাপার নিশ্চিত করছে।

মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) সড়কটির এমইএস, শেওড়াসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে দেখা যায়, সড়কের এক দিক থেকে অন্য দিকে পথচারী পারাপারের বেশির ভাগ সময়ই সহায়তা করছেন ট্রাফিক সদস্যরা। বিশেষ করে সকাল বেলা অফিসগামী এবং সন্ধ্যার দিকে ঘরমুখো মানুষদের চাপ যখন বেশি থাকে, তখন বেশ আন্তরিকতা নিয়েই এ কাজটি করেন এসব পয়েন্টে দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্যরা।

 

রাজধানীর মূল অংশ থেকে বিমানবন্দর হয়ে উত্তরা এবং উল্টো দিকে রাজধানীতে প্রবেশ পথ হওয়ায় এই সড়কটিতে প্রতি মুহুর্তেই দ্রুতগতির যানবাহনের চাপ থাকে। দ্রুতগতিতে ছুটে আসা গাড়িগুলোর সামনে একরকম ঝুঁকি নিয়েই দাঁড়িয়ে পড়েন ট্রাফিক সদস্যরা।
পথচারীদের রাস্তা পারাপারে সহায়তা করছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা, ছবি: বাংলানিউজ
শেওড়া রেলক্রসিং পয়েন্টে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অফিস আওয়ারে গাড়ি ও মানুষ; দুটোর চাপই বেশি থাকে। এখানে বারিধারা ডিওএইচএস (ডিফেন্স অফিসার্স হাউসিং সোসাইটি) এবং গুলশানে প্রবেশের সড়ক থাকায় শেওড়া স্ট্যান্ডে খুব চাপ থাকে। আর এই সড়কে যেহেতু গাড়িগুলো দ্রুতবেগে চলে, তাই আমরা গাড়ি থামিয়ে পথচারীদের পারাপারে সাহায্য করি। এটা আমাদের দায়িত্ব। তবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়ম ভঙ্গের জন্য বিভিন্ন ধরনের যানবাহনকে আইনের আওতায় করতে গিয়ে সবসময় এটা করতে পারি না।

ট্রাফিক পুলিশ ইশারা করলেও অনেক বেপরোয়া চালক গাড়ি থামাতে চায় না অভিযোগ করে এই সার্জেন্ট বলেন, গাড়ি থামানোর জন্য আমরা শুধু ইশারাই করি না, বরং আমাদের কনস্টেবলরা দেখা যায় সড়কের মাঝে চলে যান। কারণ কিছু চালক আছে, তারা পথচারী দেখে, পুলিশ দেখেও গাড়ি থামাতে চায় না। দ্রুতবেগে চলে যায়। এর জন্য আমরা সড়কের মাঝে গিয়ে গাড়িত থামাই। যেসব গাড়ি থামায় না, সেগুলোকে আইনের আওতায় আনার জন্য ওয়্যারলেসে সামনের পয়েন্টে বলে দিই।

এমইএস পয়েন্ট জেব্রা ক্রসিংয়ের ট্রাফিক কনস্টেবল আতিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, পথচারীদের পারাপার করাতে নিজেদেরও ঝুঁকি নিতে হয়। সবকাজেই ঝুঁকি আছে। আমাদের পোশাক দেখে তাও তো কিছু চালক সাবধান হয়। আমরা না থাকলে এখানেতো প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটতো।

এদিকে, পুলিশের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে প্রশংসা করছেন এখানকার পথচারীরা। ডিওএইচএস-এর একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, মিরপুর থেকে অফিসে আসার সময় এই শেওড়া স্ট্যান্ডেই বাস থেকে নামতে হয়। এরপর সড়ক পার হয়ে রেলক্রসিং থেকে রিকশা নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু এই সড়ক পার হওয়াটাই ঝুঁকিপূর্ণ। পুলিশ যখন থাকে, তখন তো মোটামুটি নিরাপদে পার হতে পারি। না থাকলে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হতে হয়।
পথচারীদের রাস্তা পারাপারে সহায়তা করছেন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা।  ছবি: বাংলানিউজ
শেওড়া হয়ে ডিওএইচএস-এর মধ্য দিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে যান উম্মে হাবিবা। তিনি বলেন, হাসপাতালে আমার এক নিকটাত্মীয় ভর্তি আছেন। তাই তাকে দেখতে কয়েকদিন ধরেই আমাকে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। এই সিগন্যালে আসলে অপেক্ষা করি কখন পুলিশ গাড়ি থামাবে, আর আমরা যাবো। সাধারণত তারা বেশি মানুষ হলে গাড়ি থামান। তবে কখনও কখনও আমরা অনুরোধ করলে পথচারী সংখ্যায় কম থাকলেও তারা যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।

এ বিষয়ে ডিএমপি ট্রাফিকের উত্তর বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার প্রবীর কুমার রায় বাংলানিউজকে বলেন, সড়কটির কয়েকটি পয়েন্টে ফুটওভার ব্রিজ নেই বা আগে ছিল, এখন সেগুলো ভেঙে নতুন করে করা হচ্ছে। এই সময়টায় পথচারীদের সমস্যা হচ্ছে। কমিশনার স্যারের নির্দেশে এই পয়েন্টগুলোতে আমরা বিশেষ নজর রাখছি, যেনো সাধারণ পথচারীরা নির্বিঘ্নে সড়ক পারাপার করতে পারেন। অনেক সময় আমরা গাড়ি থামাতে পারি না। কারণ দেখা যায়, ব্যস্ততম সড়ক হওয়ায় কিছুক্ষণ গাড়ি থামিয়ে রাখলেই লম্বা জ্যাম তৈরি হয়ে যায়। এছাড়াও আমাদের সদস্যদের ট্রাফিকের অন্যান্য কাজগুলোও দেখতে হয়। তবুও আমরা চেষ্টা করছি সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এক্ষেত্রে এই পয়েন্টগুলোতে এসে যানবাহনের চালকরা যদি একটু সচেতনতার সঙ্গে গাড়ির গতি কমিয়ে আনেন, তাহলে বিষয়টি আরও সহজ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৯
এসএইচএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।