ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বিদ্যুৎ অফিস, হাসপাতালে ব্যাপক অনিয়ম দেখলো দুদক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৯
বিদ্যুৎ অফিস, হাসপাতালে ব্যাপক অনিয়ম দেখলো দুদক

ঢাকা: বিদ্যুৎ অফিস ও হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ‘চলমান দুর্নীতির চিত্র’ সরাসরি প্রত্যক্ষ করলো দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটি এই পরিস্থিতিকে ‘ব্যাপক অনিয়ম’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

দুদকের উপপরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর অধীন ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুদক।

গ্রাহকদেরকে বিভিন্নভাবে জিম্মি করে ওই অফিসের লোকজন অবৈধ অর্থ গ্রহণ করছেন, দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন-১০৬) পাওয়া এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মাহাতাব উদ্দীন ও আহমেদ ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম বুধবার অভিযান পরিচালনা করে।  

অভিযানে দুদক টিম দেখে, মিটার রিডাররা এবং বিল প্রস্তুতকারীরা বিভিন্নভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাসিক বিল নিয়মিতভাবে দেওয়া হচ্ছে না। একাধিক মাসের বিল একসঙ্গে প্রস্তুত করা হচ্ছে, ফলে গ্রাহকদের অতিরিক্ত হারে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। এছাড়াও কোনো নোটিশ না করেই আবাসিক সংযোগের গ্রাহকদের বাণিজ্যিক হারে বিল করা হচ্ছে। মিটার রিডাররা মিটার যাচাই না করেই মনগড়া বিল প্রস্তুত করছেন। এমন বেশ কিছু প্রমাণ হাতে নাতে ধরে ফেলে দুদক টিম।

দুদক টিমের অবস্থানের সময় ভুক্তভোগীরা নতুন সংযোগ এবং মিটার দেওয়ার সময় নির্ধারিত অর্থের অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার অভিযোগ করেন বিদ্যুৎ অফিসের বিরুদ্ধে। মিটারের জামানত এবং নিবন্ধন বাবদ মাত্র একজন নতুন গ্রাহকের ৪৫০ টাকা দেওয়ার হার নির্ধারিত থাকলেও প্রত্যেকের কাছ থেকে কমপক্ষে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে এবং এ অর্থ না দিলে সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না মর্মেও অভিযোগ আসে।  

দুদক টিমের অনুসন্ধানে ২০১৮ সালে ৪২৭টি এবং ২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত নতুন সংযোগের ২০৯টি আবেদন অনিস্পন্ন রয়েছে বলে জানা যায় এবং এ অচলবস্থা অনৈতিক অর্থ না দেওয়ার কারণে হয়েছে মর্মে প্রমাণ হয়। একইভাবে অনুমোদিত কিন্তু সংযোগ দেওয়া হয়নি এমন ১২৭টি আবেদনের সন্ধান পায় দুদক। দুদক টিম সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে এবং পর্যবেক্ষণগুলো মহাব্যবস্থাপকের কাছে উপস্থাপন করে।  

মহাব্যবস্থাপক এ অনিয়মের বিষয়ে কালবিলম্ব না করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস দেন। এনফোর্সমেন্ট টিম তাদের সুপারিশসহ প্রতিবেদন কমিশনের কাছে পেশ করবে।

অন্যদিকে ঢাকার মহাখালীতে জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক নার্গিস সুলতানার নেতৃত্বে অভিযান চালিয়েছে দুদক টিম।  

ওই হাসপাতালের বেশ কয়েকজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে রোগী এবং স্বজনদের হয়রানি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পায় দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম।

দুদক টিম তাদের সুপারিশগুলো হাসপাতালের পরিচালকের কাছে উপস্থাপন করে। যারা দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছেন তাদেরকে অন্যত্র বদলি করার তাগিদও দেয় দুদক টিম।  

অতিসত্ত্বর দুদক টিমের সুপারিশগুলো আমলে এনে সিস্টেম উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা মর্মে পরিচালক দুদক টিমকে অবহিত করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৯
আরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।