ঢাকা, শুক্রবার, ১২ আশ্বিন ১৪৩১, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ কর্মকর্তাকে ববিতে অবাঞ্চিত ঘোষণা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯
রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ কর্মকর্তাকে ববিতে অবাঞ্চিত ঘোষণা সড়ক অবরোধ-ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাথায় উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক অফিসিয়ালি ছুটির দরখাস্ত দিয়েছেন।

তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ১৭ তম দিনে উপাচার্য’র এ ছুটির দরখাস্ত মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেলেও এতে সন্তুষ্ট নন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবার শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন।

ফলে আগামী দিন থেকে তারা নতুন করে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা দিতে পারেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন বাংলানিউজকে জানান, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়েছে। আর আমরা প্রথম থেকেই ভিসির পদত্যাগ চেয়ে আসছি। তারপর বরিশাল সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পূর্ণ মেয়াদে ছুটি(উপাচার্যর মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত)র বিষয়টি উঠে আসে।  এরপর আমরা ভিসির পদত্যাগ নয়তো পূর্ণ মেয়াদের ছূটির বিষয়ে লিখিত প্রাপ্তির দাবি জানিয়ে আসছি।

ছুটির দরখাস্ত ঠিকই দিয়েছেন তবে তা মাত্র ১৫ দিনের জন্য, তবে কি ১৫ দিন পরে তিনি আবার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে চাচ্ছেন। পরীক্ষা বন্ধ দিয়ে টানা ১৭ দিনে মহাসড়ক অবরোধসহ নানান কর্মসূচী পালন করছে শিক্ষার্থীরা, তাতেও যদি কারো টনক না নরে তবে শিক্ষার্থীরাও আন্দোলন চালিয়ে যেতে অনর রয়েছেন।

শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, উপাচার্যর মেয়াদকাল আগামী মাসে শেষ হবে। আমরা চেয়েছি তিনি পূর্ণ মেয়াদে ছুটিতে যাক নয়তো পদত্যাগ করুক। উপাচার্যর এ ধরনের ছুটিতে আমরা কেউ সন্তুষ্ট নই, তাই আমরা ওই ছুটি প্রত্যাখ্যান করেছি এবং আন্দোলন চালিয়ে যাবো বলেই ঠিক করেছি। প্রয়োজনে আন্দোলনে আরো কঠোর কর্মসূচী আসতে পারে।

উল্লেখ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবার প্রেরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মোঃ হাসিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক স্মারক সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস এম ইমামুল হক ব্যক্তিগত প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আজ ১১ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১৫ দিনে ছুটিতে যাচ্ছেন। আবার ওই স্মারকে ২৬ এপ্রিল উপাচার্যকে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে।

একইসাথে ওই দরখাস্তে বলা হয়েছে, উপাচার্যর ছুটিকালীন সময়ে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. একেএম মাহবুব হাসান তার নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত হিসেবে উপাচার্যর রুটিন কাজসমূহ পরিচালনা করবেন। এছাড়া বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সিন্ডিকেট সভা না থাকায় বিষয়টি পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

এদিকে এ স্মারক শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানোর পর বেলা ২ টার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি তুলে নেয়ার জন্য বলা হলেও তারা তা করেননি। বরং কঠোর কর্মসূচী দেয়ার হুশিয়ারী দিয়ে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তারা উপাচার্যর সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোঃ হাসিনুর রহমান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল রুমিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন।

বন্দর থানার ওসি (তদন্ত) ফয়সাল আহমেদ জানান, ভিসির ছুটির দরখাস্ত দেয়ার বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করা হচ্ছে, যাতে তারা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি গুটিয়ে নেয়।

অপরদিকে বিকেল ৫ টায় গতকালের মতো যথানিয়মে অবরোধ কর্মসূচী স্থগিত ঘোষনা করা হলে টানা ৬ ঘণ্টা পরে বরিশাল থেকে সাগরকন্যা কুয়াকাটাসহ পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলার সাথে সড়কপথে যান চলাচল শুরু হয়।

অবরোধের কারণে দীর্ঘ ৬ ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীসাধারণের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পাশাপাশি শুধু যাত্রীবাহি পরিবহন খাতেই প্রতিদিন কয়েকলাখ টাকার ক্ষতি সাধন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রুপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন। আর পণ্যবাহিসহ সামগ্রিক পরিবহন খাতেও ক্ষতির পরিমান বাড়ছে, তাই যতো দ্রুত সম্ভব এ সমস্যার সমাধান চান পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ০২২২ ঘন্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯
এমএস/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।