ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

লক্ষ্মীপুরে এসে দগ্ধ সেই তরুণীর মৃত্যু, মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
লক্ষ্মীপুরে এসে দগ্ধ সেই তরুণীর মৃত্যু, মামলা অগ্নিদগ্ধ তরুণী শাহীনুর আক্তার। ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: স্ত্রীর স্বীকৃতি আদায়ে চট্টগ্রাম থেকে লক্ষ্মীপুরে আসার পর আগুনে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহীনুর আক্তার (২৫) নামের এক তরুণী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেছেন।  

তিনি জানান, সোমবার (২২ এপ্রিল) রাতে ওই তরুণীর বাবা বাদী হয়ে কমলনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইননের ৪(১)/৩০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলায় সালাউদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রধান আসামি সালাউদ্দিন ছাড়া বাকি চার আসামি সালাউদ্দিনের ভাই আলাউদ্দিন, আবদুর রহমান, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)সদস্য হাফিজ উদ্দিন ও গ্রামপুলিশ আবু তাহের আটক রয়েছেন।

সোমবার বেলা ১১ টার দিকে অগ্নিদগ্ধ শাহীনুর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান। তার শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়। তার শ্বাসনালী পুড়ে গিয়েছিলো।

এরআগে রোববার (২১ এপ্রিল) বিকেলে কমলনগর উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওর্য়াডের আইয়ুবনগর এলাকার একটি সয়াবিন ক্ষেতের ভেতর থেকে গায়ে আগুন লাগা অবস্তায় দৌড়ে বের হন শাহীনুর। পরে দগ্ধাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন ইউপি সদস্য হাফিজ উদ্দিন ও গ্রাম পুলিশ আবু তাহের। অবস্থার অবনতিতে রাতেই তাকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় দগ্ধ শাহীনুর জানিয়েছিলেন, দুই বছর আগে মোবাইল ফোনে কমলনগরের পাটারীরহাট এলাকার মোহর আলীর ছেলে সালাউদ্দিনের সঙ্গে তার প্রেম হয় এবং এর কয়েকমাস পরে রাউজানে একটি কাজী অফিসে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সালাউদ্দিন শ্বশুরালয়ে আসা-যাওয়া করলেও স্ত্রীকে কখনই নিজের বাড়ি নেওয়ার আগ্রহ দেখাননি। তাই স্ত্রীর স্বীকৃতি আদায়ে চট্টগ্রাম থেকে লক্ষ্মীপুরে সালাউদ্দিনের বাড়িতে আসেন শাহীনুর। সেখানে আসার পর সালাউদ্দিন বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং কেরোসিন ঢেলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন।
 
স্থানীয়রা জানান, এসময় ওই তরুণীর কাছে বিয়ের কাবিননামা চাওয়া হলে, তাৎক্ষণিকভাবে সে তা দেখাতে পারেননি। পরে তাকে কাবিননামা আনতে বলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার বিকেলে তাকে একটি ব্যাটারিচালিত ইজবাইকে করে চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য হাজিরহাট বাসস্ট্যান্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু কিছু দূর গিয়ে ওই তরুণী ইজিবাইক থেকে নেমে ফের সালাউদ্দনের বাড়িতে (শ্বশুরবাড়ি) যায়। এর কিছুক্ষণ পর গায়ে আগুন নিয়ে সয়াবিন ক্ষেত থেকে দৌড়ে বের হয় ওই তরুণী।

বিষয়টি জানতে চাইলে কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বলেন, বিষয়টি আমরা এখনও নিশ্চিত নই। একেক জন একেক কথা বলেছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে।  বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
এসআর/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।