ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অনিয়ম ধরতে হাসপাতালে হানা মাশরাফির

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৯
অনিয়ম ধরতে হাসপাতালে হানা মাশরাফির হাসপাতালে মাশরাফি বিন মুর্তজা

নড়াইল: জনপ্রতিনিধি হিসেবে ভিন্ন এক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দেখলো নড়াইলবাসী। জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগদানের আগে দু’দিন নিজের নির্বাচনী এলাকায় সফরে করেছেন এ সংসদ সদস্য। সেসময় তিনি সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন হাসপাতালকে। নানা অনিয়ম ধরে হাসপাতালে হানা দেন তিনি।

কাউকে কিছু না জানিয়ে ২৫ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দুপুর সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টানা ২ ঘণ্টা নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে ঝটিকা সফর করেন মাশরাফি। তখন হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তারদের অবস্থান জানতে হাজিরা খাতা চেক করেন তিনি।

হাজিরা খাতায় সার্জারি চিকিৎসক সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আকরাম হোসেনের ৩ দিনের অনুপস্থিতি দেখে ছুটির আবেদন দেখতে চান তিনি। পরে জানতে পারেন ছুটি ছাড়াই সেই চিকিৎসক ৩ দিন অনুপস্থিত রয়েছেন!

এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে মাশরাফি প্রথমে রোগী সেজে ওই চিকিৎসককে ফোন করেন, তখন চিকিৎসক তাকে রোববার হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতে বলেন। এ সময় নিজের পরিচয় দিয়ে মাশরাফি ডাক্তারকে বলেন, ‘এখন যদি হাসপাতালের সার্জারি প্রয়োজন হয় তাহলে সেই রোগী কী করবে?’ এরপর সেই ডাক্তারকে তার কর্তব্যর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে দ্রুত কর্মস্থলে ফিরে আসার নির্দেশ দেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’।

এছাড়া হাসপাতালের নারী ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীদের সাথে কথা বলে তাদের কাছ থেকে নানা ধরনের সমস্যা শোনেন মাশরাফি। ওই সময় পুরো হাসপাতালে মাত্র একজন ডাক্তারের উপস্থিতি দেখতে পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি।
সদর হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে মাত্র ২ জন নার্স দেখে তাদের ডিউটির ব্যাপারেও খোঁজ নেন এ ক্রিকেটার। জানতে পারেন হাসপাতালে পর্যাপ্ত নার্স থাকলেও ২-১ জন নার্স দিয়েই বিভিন্ন ওয়ার্ড পরিচালিত হচ্ছে।

ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক নার্সিং সুপারভাইজারদের খোঁজ করেন মাশরাফি। নার্সদের কক্ষে তালা দেখতে পেয়ে মোবাইলে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় একজন সুপারভাইজারের মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায় এবং অপরজনের মোবাইল খোলা থাকলেও রিসিভ করেনি।

রোগীদের অনুরোধে হাসপাতালের বাথরুম ও তার পরিবেশ মাশরাফি নিজে দেখেন এবং মোবাইলে ছবি তুলে নেন। কয়েকটি বাথরুমের দরজা ভাঙ্গা এবং দুর্গন্ধ তাকে অত্যন্ত বিব্রত করে তোলে। তিনি এ ব্যাপারে জানার জন্য আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে মোবাইলে কল করতে বলেন। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর বিথী খাতুন এ সময় অফিসে উপস্থিত থেকে মাশরাফির নানা প্রশ্নের জবাব দেন।

মাশরাফি জানতে পারেন, হাসপাতালের চিকিৎসক সংকট থাকলেও নার্সের কোনও সংকট নেই। ৭৩ জন নার্স রয়েছে ওই হাসপাতালটিতে।

এমন ভূমিকা দারুণ প্রশংসা কুড়িয়েছে মাশরাফি। তাকে নিয়ে ইতোমধ্যে হাজারও মানুষ ফেসবুকে আলোচনার ঝড় তুলেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০২৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৯
জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।