রোববার (১৪ জুলাই) দুপুরে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের ধরলা অববাহিকার চর বড়াইবাড়ি গ্রামের মজিয়া খাতুন (৫০) নামে এক নারী নিজের বাড়ির উঠোনে হাঁটু পানিতে দাঁড়িয়ে এভাবেই বাংলানিউজকে বন্যা দুর্ভোগের কথাগুলো বলছিলেন।
তিনি বলেন, যেভাবে পানি বাড়ছে, এতে বাড়িতে থাকা দায় হয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রোববার বিকেল পর্যন্ত কুড়িগ্রামের সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার, চিলমারি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপরে ছিলো।
সরকারি হিসেবে কুড়িগ্রাম জেলার নয়টি উপজেলার নদ-নদী অববাহিকার চর-দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বর্তমানে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে কমপক্ষে ৫২ হাজার ৫২০টি পরিবারের প্রায় দুই লাখেরও বেশি মানুষ। এছাড়া বন্যার পাশাপাশি নদী ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়েছে এক হাজার ৩১টি পরিবার।
বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। লোকজন আশ্রয় নিতে শুরু করেছে পার্শ্ববর্তী উঁচু বাঁধ, পাকা সড়ক ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এসব এলাকার কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
নদ-নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের পানিবন্দি কিছু পরিবার নৌকার অভাবে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে উঁচু জায়গায় যেতে পারছেন না। অনেক পরিবারই অন্যের নৌকা ধার নিয়ে উঁচু স্থানে আসতে শুরু করেছেন। এছাড়া চরাঞ্চলগুলোতে শুকনো জায়গা না থাকায় গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার অনেক মানুষ।
কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বন্যা মোকাবিলায় আমরা পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোর জন্য ২৮০ মেট্রিক টন চাল, দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও নগদ ছয় লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এগুলো বন্যাকবলিত এলাকায় বিতরণ শুরু হয়েছে। এছাড়াও ২২০ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে আরও এক হাজার মেট্রিক টন জিআর চাল, ২০ লাখ টাকা এবং ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
এফইএস/এসএ