পরে সকাল ৯টায় ২২ সেন্টিমিটার, বেলা ১২টায় ওই পানি বেড়ে গিয়ে ২৫ সেন্টিমিটার ও বিকেল ৩টায় আবারও ৫ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে নদীর তীরবর্তী জলঢাকা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের সহস্রাধিক পরিবার হয়ে পড়েছেন পানিবন্দি।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) গেজ পাঠক (পানি পরিমাপক) নুরুল ইসলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, বন্যার পানি সামাল দিতে তিস্তা ব্যারেজের সবকটি (৪৪টি) গেট খুলে রাখা হয়েছে।
ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, অব্যাহত পানি বাড়ার ফলে বন্যাকবলিত হয়েছে জেলার জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের প্রায় ১২টি চর গ্রাম। এতে ওইসব গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে জানান সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা।
উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হোসেইন বাংলানিউজকে বলেন, ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বেড়ে ইউনিয়নের হলদিবাড়ী, সাইফুন বাজার ও ভবনচুর গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব পরিবারগুলোর ঘর-বাড়িতে হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে গেছে।
উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রাণজিৎ রায় পলাশ বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে তিস্তার পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় ইউনিয়নের বানপাড়া এলাকায় একটি গ্রামরক্ষা বাধঁ হুমকির সম্মুখীন হলে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বালির বস্তা ফেলে বাধেঁর ভাঙন সাময়িকভাবে রোধ করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া ওই বাধেঁর পাশে পানিবন্দি হয়েছেন প্রায় ৪০টি পরিবার।
যোগাযোগ করা হলে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ পুনর্বাসন কর্মকর্তা এসএ হায়াত মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, জলঢাকা উপজেলার বন্যাকবলিত মানুষের তালিকা এখনো হাতে পাইনি। তালিকা পেলে কি পরিমাণ ত্রাণ দেওয়া হবে, তা জেলা পর্যায়ের বৈঠকের পর জানানো হবে।
জলঢাকা উপজেলা ত্রাণ পুনর্বাসন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ময়নুল হক বাংলানিউজকে বলেন, পানিবন্দি পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করতে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ইউএনওসহ সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত তালিকা তৈরি করে জেলা পর্যায়ে দেওয়া হবে।
এদিকে, জেলা সদরে গত পাঁচদিনের টানা বৃষ্টির কারণে রামনগর, কচুকাটা, পঞ্চপুকুরের বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া, নীলফামারী পৌরসভার মাস্টারপাড়া, বাড়াইপাড়া, সওদাগড়পাড়া, নিউ বাবুপাড়ার (মুরগিহাটি) রাস্তা-ঘাটসহ নিম্নাঞ্চলের শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। একইভাবে সৈয়দপুর, কিশোরগঞ্জ ও ডোমারে নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মহসিন রেজা রূপম বাংলানিউজকে বলেন, জেলায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৭৯ দশমিক ৬৬ মিলিমিটার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে জলঢাকায় ১৩৯ মিলিমিটার, সদরে ১১০ মিলিমিটার ও ডোমারে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৮২ মিলিমিটার।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
এসআরএস