সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্লাবিত গ্রামগুলোর রাস্তাঘাট, আমন ধানের বীজতলা ও সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে শতাধিক পুকুরের মাছ।
এদিকে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারসী ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বেড়েছে। নদীগুলোর তীরবর্তী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে চার ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল।
ঝিনাইগাতী দড়িকালীনগর এলাকার হোসনে আরা বাংলানিউজকে বলেন, দু’দিন ধরে ঘরের মেঝে ও চুলায় পানি উঠেছে। তাই রান্না করতে পারিনি। পোলাপান (বাচ্চা) নিয়ে শুকনো খাবার খেয়ে আছি। গৃহপালিত পশুগুলো শুকনো খড় ছাড়া অন্য কোনো খাদ্য খেতে পায়নি। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা এখন পর্যন্ত আমাদের খোঁজ নেয়নি।
এদিকে, উজান থেকে নেমে আসা পানিতে নকলা উপজেলার মৃগী নদীতে পানির তীব্র স্রোতে ভাঙন শুরু হয়েছে। শনিবার দুপুরের দিকে মৃগী নদীর ভাঙনে নকলার বাছুর আলগা দক্ষিণপাড়া গ্রামের আফাজ উদ্দিনের বাড়ির বসতভিটাসহ মাহবুব হাজী ও জামাল চৌকিদারের ১০ শতক আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ও মরিচপুরান ইউনিয়নের আটটি গ্রামে নতুন করে পাহাড়ি ঢল প্রবেশ করেছে। ভোগাই নদীর তীরবর্তী বাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে এলাকাবাসী।
এদিকে, নালিতাবাড়ী পৌরশহরের গড়কান্দা এলাকায় চেল্লাখালী নদীর পানি বেড়ে কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
মরিচপুরান ইউনিয়নের বাসিন্দা বাবুল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এ ইউনিয়নে শনিবার দুপুর থেকে পানি প্রবেশ করছে। এতে আমরা খুব চিন্তাই পড়ে গেছি।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) লুবনা শারমিন বাংলানিউজকে বলেন, উজানের পানি নেমে আসায় কিছু গ্রামে পানি প্রবেশ শুরু করেছে। এখনো পানিবন্দি হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।
নকলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, নদী ভাঙনের হাত থেকে সতর্ক থাকার জন্য এলাকাবাসীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষকে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। ভাঙনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা উপজেলা প্রশাসনের। তবে যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
এনটি