শনিবার (২০ জুলাই) এক যৌথ বিবৃতিতে মোর্চার নেতারা বলেন, ‘হঠাৎ করেই দেশের অভ্যন্তরে বিরাজমান শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তোলার একটি চাপা ষড়যন্ত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টি করে পরিকল্পিত অশান্তি ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের অপচেষ্টা আমরা লক্ষ্য করছি।
তারা বলেন, ‘বাংলাদেশে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে এবং এখনও ঘটে চলেছে- এ বিষয়টি কেউ অস্বীকার করেনি। কিন্তু তার যে সংখ্যাগত পরিসংখ্যান প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে উপস্থাপন করেছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমরা বরাবরই সোচ্চার। বাংলাদেশ সরকারও এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে আমরা মনে করি। ’
জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদদের আমলে এবং পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই সরকারের আমলেও যে সমস্ত সংগঠিত কিংবা বিচ্ছিন্ন সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, সেসবেরও বিচার আমরা প্রত্যাশা করি। আমরা মনে করি, সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং দেশত্যাগের যে সমস্ত ঘটনা এখানে ঘটেছে, দেশের প্রচলিত আইনেই তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এসব বিচারের দাবিতে দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সকল শক্তিকেই ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হতে হবে। ’
‘কিন্তু এ বিষয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও মনগড়া তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে বিদেশি কোনো বহিঃশক্তির কাছে দেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ কামনা করা রীতিমতো রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। যিনি এ কাজ করেছেন, তিনি অত্যন্ত নিন্দনীয় ও গর্হিত অপরাধ করেছেন। বাংলাদেশের সরকার এ ব্যাপারে তার নিজস্ব আইন অনুযায়ীই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে আমরা আশা করি। ’
বিবৃতিতে মোর্চার নেতারা বলেন, ‘আমরা মনে করি, বাংলাদেশের সকল অভ্যন্তরীণ বিষয় সমাধানের মালিক একমাত্র বাংলাদেশ ও তার জনগণ। কোনো নিকটতম প্রতিবেশী কিংবা দূরতম কোনো রাষ্ট্র আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর কর্তৃপক্ষ নয়। ’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, কবি ও সাংবাদিক অসীম সাহা, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ মোর্চার আহ্বায়ক ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ, সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুজ জাহের, গৌরব ৭১ এর উপদেষ্টা কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনি, ব্লগার অ্যান্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের (বোয়ান) সভাপতি ড. কানিজ আকলিমা সুলতানা, সাংবাদিক বাণী ইয়াসমিন হাসি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জয়নাব বিনতে হোসেন, ওয়ার্ল্ড অটিজম অ্যান্ড ইকোলজি ফিল্ড ফোরাম বাংলাদেশের সভাপতি এবং কবি ও চলচ্চিত্র পরিচালক মাসুদ পথিক, উঠোন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি অনিকেত রাজেশ, ইয়ুথ ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সহ-সভাপতি অর্ণব দেবনাথ, এনভায়রনমেন্টাল কগনিশন অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস ফর ডিসেনড্যান্টসের চেয়ারপারসন মুনতাহা বিনতে নূর, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ মোর্চার প্রধান সমন্বয়ক এফ এম শাহীন, কেন্দ্রীয় সদস্য ফারাবী বিন জহির অনিন্দ্য এবং সমন্বয়ক বাপ্পাদিত্য বসু।
পুরো বিবৃতি পড়তে ক্লিক করুন
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৯
এইচএ/