মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী এ কর্মসূচিতে অবস্থান নিয়েছেন।
দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে দেখা যায়, ফুটপাতে অবস্থান নিয়েছেন সহস্রাধিক পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী। পলিথিনের ত্রিপল টাঙিয়ে বসে আছেন আন্দোলনকারীরা। কেউ ছাতা মাথায় রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন।
‘মাস শেষে বেতন নাই, এ কেমন চাকরি ভাই’ ‘দেখ কত জ্বালা, পৌরসভায় তালা’ বঙ্গবন্ধু কন্যা হাসিনা, বেতন ছাড়া বাঁচি না’ এমন নানা স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা। খণ্ড খণ্ড মিছিল হচ্ছে। মাঝে মাঝে গানের মাধ্যমেও দাবি জানাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন-ভাতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সবশেষ ১৪ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তারা।
পৌরসভায় স্থায়ী ও মাস্টাররোল মিলিয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারী আছেন ৩৫ হাজারের বেশি। সরকার ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অনুন্নয়ন বাজেটের আওতায় দেশের পৌরসভাগুলোর বেতন-ভাতা খাতে ১৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছিল, যা চাহিদার ১ শতাংশের কম। সারাদেশের ৩২৮টি পৌরসভার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ পৌরসভার ৪ থেকে ৭৮ মাস পর্যন্ত বেতন বকেয়া আছে। আর পি এফ ও গ্র্যাচুইটি শতভাগ বকেয়া।
সংগঠনের সভাপতি ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার সচিব মো. আব্দুল আলীম মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, গত রোববার (১৪ জুলাই) থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা না আসা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এরই মধ্যে দেশের সব পৌরসভা বন্ধ থাকায় নাগরিক সেবা থেকে পৌরসভার বাসিন্দারা বঞ্চিত হচ্ছেন। এটা আমাদের কারও কাম্য নয়। তাই অবিলম্বে দাবি মেনে নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা আশা করছি।
আব্দুল আলীম মোল্লা আরও বলেন, পৌর কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শাস্তি দেয় সরকার, আর বেতন দেয় পৌরসভা। এভাবে আর চলতে পারে না। সরকারি কর্মচারী হয়েও আমরা আর্থিক, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতায় আছি। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে পৌরসভার কর্মকর্তা, কর্মচারীদের শতভাগ বেতন-ভাতাসহ পেনশন চালু না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
তিনি বলেন, টানা দশদিনের আন্দোলনে দুই শতাধিক কর্মচারী অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, নারী নেত্রী রোকসানা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছেন। এছাড়া কর্মসূচিতে এসে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট পৌরসভার সচিব মোবারক হোসেন গত ১৬ জুলাই রাতে মৃত্যু মারা যান। ২২ জুলাই রাতে লাকসাম পৌরসভার নলকুপ মিস্ত্রি আব্দুল মজিদ (৫৫) মৃত্যু মারা যান।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৯
এমএইচ/ওএইচ/