ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রিফাত হত্যা মামলার তদন্ত পিবিআইতে হস্তান্তরের দাবি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৯
রিফাত হত্যা মামলার তদন্ত পিবিআইতে হস্তান্তরের দাবি

বরগুনা: বরগুনার চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যা মামলার তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর।

বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে বরগুনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে মিন্নির মা জিনাত জাহান মনি, ছোট বোন ছামিরা মেঘলা, ছোট ভাই আবদুল মুহিত ক্বাফি উপস্থিত ছিলেন।

রিফাত ফরাজী ও রিশানকে চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যার পরিকল্পনাকারী উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মিন্নির বাবা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের আগে রিফাতের সঙ্গে বরগুনা জেলা পরিষদের প্রশাসক দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী সামসুন্নাহার খুকির বাকবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি সামসুন্নার খুকি তার বোনের ছেলে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর কাছে নালিশ করেন। এরপর রিফাত ও রিশান ফরাজী রিফাত শরীফকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বিষয়টি মিন্নি আমাকে জানিয়েছিল।

আরও পড়ুন...রিফাত হত্যা: শ্রাবণের জামিন নামঞ্জুর

মিন্নিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে পুলিশ তার জবানবন্দি নিয়েছে- এমন অভিযোগ করে মিন্নির বাবা বলেন, প্রভাবশালী মহলকে বাঁচাতে পুলিশ আমার মেয়ে মিন্নিকে ফাঁসাচ্ছে। তাই এ মামলার তদন্ত পিবিআইতে হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি।

২৬ জুন প্রকাশ্য দিবালোকে বরগুনা সরকারি কলেজ রোডে স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। পরে বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাতের মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড মঙ্গলবার (০২ জুলাই) ভোরে জেলা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। এরমধ্যে কয়েকজন আসামিও গ্রেফতার হন।
 
পরে ১৬ জুলাই মঙ্গলবার সকালে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরগুনার পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রিফাত হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ওইদিন রাত ৯টার দিকে মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

পরদিন ১৭ জুলাই বুধবার বিকেলে মিন্নিকে আদালতে হাজির করে সাতদিন রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে শুনানি শেষে বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কিন্তু ওইদিন মিন্নিরপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলো না।
 
রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে ১৯ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে বরগুনা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে মিন্নি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
 
গত শুক্রবার এ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে জানিয়েছিলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মিন্নিকে আদালতে তোলা হয়। সেখানে রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে মিন্নি জবানবন্দি দেন।  

এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে মিন্নিসহ ১৩ জন রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।