ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আল্লাহ যেন কারও ডেঙ্গু না দেয়: অর্থমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৯
আল্লাহ যেন কারও ডেঙ্গু না দেয়: অর্থমন্ত্রী অনুষ্ঠানে অতিথিদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, গত ১৩ জুন প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করি। কিন্তু, সেদিনটি ছিল আমার জীবনের চরম কষ্টের দিন। কারণ, এর তিন দিন আগে অর্থাৎ ১০ জুন ডেঙ্গু জ্বরে ভয়ানকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি ও হাসপাতালে ভর্তি হই। ডেঙ্গুর যন্ত্রণা কী, আমি বুঝি। আল্লাহ যেন আর কারও ডেঙ্গু না দেয়। 

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দু’দিনব্যাপী ‘গুড প্রজেক্ট ইমপ্লেমেন্টেশন ফোরাম’র সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ডেঙ্গু জ্বরের তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এর ভয়াবহতা আমি বুঝি।

এ যন্ত্রণাও বুঝি। চিকুনগুনিয়ার পরেই আমি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছি। এ অসুস্থতা নিয়েই গত ১৩ জুন সংসদে আসি। আমার বিশ্বাস ছিল, আমি প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করতে পারবো। কিন্তু, যা ভেবেছিলাম, বাস্তবতা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। অধিবেশন শুরুর আগে যখন সংসদে প্রবেশ করি, তখন থেকে পরবর্তী সাত-আট মিনিট আমি সম্পূর্ণভাবে ‘ব্ল্যাংক’ ছিলাম।

তিনি বলেন, আমার কোনো কিছুই মনে পড়ে না। কোনো রকমে গিয়ে আমার আসনে বসলাম। তখন কেবল মনে হচ্ছিল, প্রবল এক ভূমিকম্প পৃথিবীতে আঘাত হেনেছে। সে ভূমিকম্পের কারণেই যেন ক্ষণে ক্ষণে আমার কম্পন হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, আমি সিট থেকে পড়ে যাচ্ছি। তখন মনে মনে দোয়া পড়তে শুরু করলাম।

বাজেট প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, চলতি বাজেট ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার। ২০৩৪ সালে এর আকার হবে ১ ট্রিলিয়ন ডলার (১০০ কোটি সমান এক বিলিয়ন ও এক হাজার বিলিয়নে এক ট্রিলিয়ন)।

মুস্তফা কামাল বলেন, বাজেটের পাশাপাশি দেশে অর্থনীতির আকার বাড়ছে। আমার কথার কোনো বিচ্যুতি হয় না। গত ১০ বছরে অর্থনীতি নিয়ে যা বলেছি, তাই হয়েছে। ২০৩০ সালে বাংলাদেশ ৩২তম অর্থনীতির দেশ হবে। আমরা বিনিয়োগ করে যাচ্ছি, ফল এখনও পাইনি, তবে খুব শিগগিরই পাবো।

দেশের সার্বিক উন্নয়নচিত্র তু্লে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে প্রভাবশালী ২০ দেশের তালিকায় আসছে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে যেসব দেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে, তার মধ্যে বাংলাদেশ থাকবে। ওই সময় বৈশ্বিক জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে, এমন শীর্ষ ২০ দেশের তালিকায় ঢুকবে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, সম্প্রতি আইএমএফ বৈশ্বিক অর্থনীতির যে প্রক্ষেপণ প্রকাশ করেছে, সে তথ্যের ভিত্তিতে ব্লুমবার্গ এ বিশ্লেষণ করেছে।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে চীন। চীনের অবদান থাকবে ২৮ শতাংশ। এরপরই রয়েছে ভারত।

বাংলাদেশের উন্নয়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অবদান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এডিবি দেশের নানা উন্নয়নে ২৫ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করেছে, আরও ১০ বিলিয়ন ডলার পাইপলাইনে আছে।

মুস্তফা কামাল আরও বলেন, অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য পিডি (প্রকল্প পরিচালক) ও ডিপিডিদের (উপ-প্রকল্প পরিচালক) থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন ও সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে।

এসময় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ, ইআরডির অতিরিক্ত সচিব ফরিদা নাসরিন উপস্থিত ছিলেন।

দু’দিনের এ ফোরামে ভারত, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়ার প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৯
এমআইএস/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।