রূপপুর গ্রিন সিটি প্রকল্পের নির্মাণাধীন ২০ ও ১৬ তলা ভবনের আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা ও ভবনে ওঠানোর কাজে অস্বাভাবিক ব্যয় তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির প্রতিবেদন বুধবার (২৪ জুলাই) প্রকাশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিবেদন তুলে ধরে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, তদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনায় ৩৪ জন কর্মকর্তা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কিছু ঠিকাদারি কাজে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী রূপপুর গ্রিন সিটি প্রকল্পের আসবাবপত্র কেনায় অনিয়মে জড়িয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছে এ চিঠিতে তার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এর সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালরে কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার তথ্য সঠিক নয় বলেও জানানো হয়েছে চিঠিতে।
এদিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ক্রয় সংক্রান্ত যে বিষয়ে অনিয়ম ধরা পড়েছে সেটা সম্পূর্ণ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বিষয়। রূপপুরের গ্রিন সিটি প্রকল্পের ভবনের আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনা ও ভবনে ওঠানোর কাজের দায়িত্ব ছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন গণপূর্ত বিভাগের। ঠিকাদার নিয়োগ থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করেছে গণপূর্ত বিভাগ। এই কাজের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট না।
অস্বাভাবিক ব্যয় তদন্ত করার জন্য যে আলাদা দু’টি কমিটি গঠন করা হয়েছিল সে কমিটি দু’টি রিপোর্ট দিয়েছে। উভয় কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে বিভিন্ন অনিয়মের জন্য মোট ৩১ জন কর্মকর্তাকে দায়ী করে। এদের মধ্যে একজন কর্মকর্তা একেবারেই নবীন। তার বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখার জন্য উভয় কমিটি সুপারিশ করেছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দু’টি কমিটির যে তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংবাদ সম্মেলনে তথ্য দেওয়া হয়েছে সেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা জড়িত থাকার কথা নেই। এছাড়া কমিটির প্রতিবেদনে ৩১ জনের জড়িত থাকার কথা বলা হয়েছে এবং ওই কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা সবাই গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে। সেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তার নাম নেই।
কিন্তু গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী তার বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের চারজন কর্মকর্তার জড়িত থাকা ও তাদের নাম উল্লেখ করেছেন। গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় একমত নয়। এ বিষয়ে পরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানাবে বলেও ওই কর্মকর্তারা জানান।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা পরে বিষয়টি সম্পর্কে মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানাবো।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৯
এসকে/এএ