ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সাজাভোগ শেষে দেশে ফেরা

শখ-ভুলের খেসারত ৩০ বাংলাদেশির 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৯
শখ-ভুলের খেসারত ৩০ বাংলাদেশির  ফেরত আসা ৩০ বাংলাদেশি। ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: শখের বশে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে ভারতে ঘুরতে গিয়েছিলেন কুমিল্লার আবুল খায়ের। তার সেই শখ জীবন থেকে কেড়ে নিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ক’টি বছর। ধরা পড়েন সে দেশের পুলিশের হাতে। এরপর ভারতের গোয়ালপাড়া কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি।

অনুতপ্ত খায়ের দেশের মাটিতে পা রেখে হতাশায় কেবল চোখের জলই ফেলেছেন। বলেছেন, ‘আমি যে ভুল করেছি, অন্য কেউ যেন এমন ভুল না করে।

’ তার মতো জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় ভারতের কারাগারের অন্ধকার প্রকোস্টে কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন ৩০ বাংলাদেশি।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সিলেটের জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন দিয়ে তাদের ফেরত দেয় ভারতের পুলিশ।

এদিন জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা (এসআই) রফিকুল ইসলাম ও জকিগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন করিমগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেবজিত নাথ ও ইন্সপেক্টর আব্দুল ওয়াকিল আহমদ।

হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষে প্রত্যেককে তাদের স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। স্বজনদের কাছে পেয়ে অনেকেই আবেগে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।

দেশে ফেরাদের একজন নেত্রকোণার আবুল কাশেম। প্রায় ৬ বছর আগে নিখোঁজ কাশেমের আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন বলে জানান তার মা হাসিনা বেগম ও বড় ভাই জয়নাল আবেদীন। সরকারি তৎপরতায় আপনজনকে ফিরে পাওয়ায় নিজেদের আনন্দ অনুভূতি ব্যক্ত করেন তারা।

জামালপুরের চাঁন্দ মিয়ার বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এসএম আব্দুল মান্নান বলেন, অবৈধভাবে কেউ প্রবাসে গিয়ে নিখোঁজ হলে পরিবারে দুঃখের সীমা থাকে না। ৭ বছর পরে ছোট ভাইকে কাছে পেয়ে আমি খুশি।

জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় সাংবাদিকদের বলেন, ভারত থেকে ফেরত পাঠানো বাংলাদেশিরা ২ থেকে সর্বোচ্চ ২৩ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন কারাগারে সাজা ভোগ করেছেন।

তিনি বলেন, আটকদের সঠিক পরিচয় না থাকার কারণে অনেকে দীর্ঘদিন সাজা ভোগ করেছেন। পরবর্তীতে ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যেমে নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরে তাদের হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

ফেরত আসা ৩০ বাংলাদেশিদের মধ্যে রয়েছেন, কুমিল্লার ৪ জন। সিলেট, কক্সবাজার, নাটোর, ফরিদপুর, কুড়িগ্রাম নেত্রকোণা, পঞ্চগড় ও চুয়াডাঙ্গার ২ জন করে। বগুড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পাবনা, সাতক্ষীরা, চাঁদপুর, ময়মনসিংহ, খাগড়াছড়ি, জামালপুর, দিনাজপুর ও খুলনার একজন করে।

তারা হলেন- সিলেটের আব্দুল কুদ্দুস (৪৫), সুনামগঞ্জে লক্ষণ চক্রবর্তী (২৭), কুমিল্লার মোহাম্মদ জাবেদ (৪৮), মুমিন আলী (৩৭), কার্তিক চন্দ্র শীল (৪৮), আবুল খায়ের (৩০), কক্সবাজারের নুরুল আলম (৩২), আরিফুল হাকিম (৩৮), বগুড়ার আবুল কালাম আজাদ (৩৩),ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওয়াহিদুল হক (৩৫), নাটোরের বাবুল সর্দার (৫২), ইউনুছ আলী (৩১),ফরিদপুরের মোজাহার মোল্লা (৩৯), সাহেলা আক্তার (২৩), কুড়িগ্রামের সাদ্দাম হোসেন (২৩),জাহাঙ্গির আলম (২৭), পাবনার ফজর আলী মোল্লা (৩৭), সাতক্ষিরার আজবাহার পিয়াদা (৬৫),চাঁদপুরের নুর মোহাম্মদ গাজী (৫৫), নেত্রকোণার সুচিত্রা বিশ্বাস (৪৩), আবুল কাশেম (৫০),ময়মনসিংহের আসমা বেগম (৩৭), খাগড়াছড়ির নুরুল আমিন (৩০), জামালপুরের চাঁন্দ মিয়া ওরফে কাওছার আহমদ (৪৯), পঞ্চগড়ের ইলিয়াছ আহমদ (৩০), জাহাঙ্গীর আলম (৩৩), দিনাজপুরের জাহাঙ্গীর আলম সম্ভু (৩৭), খুলনার আবুল কালাম মোল্লা (৪৯),  চুয়াডাঙ্গার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (৪৬) ও চট্টগ্রামের আশীষ দাস (৫১)।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৯
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।