শুক্রবার (২৬ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে কক্সবাজার ফোরাম আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সমস্যা: মহাসংকটে কক্সবাজার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা।
আলোচনা সভায় বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, বিপদের সময় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আমরা খারাপ করিনি।
তিনি বলেন, এই বিরাট সংখ্যক রোহিঙ্গাদের অন্যত্র না সরিয়ে যেখানে আছে সেখান থেকেই বিশ্ববাসীর কাছে সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা করতে হবে। তাদের অন্যস্থানে নেওয়া মানেই বিশ্বের অনেকেই বুঝবে তাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা আসায় যত সমস্যা হয়েছে তার চেয়ে বড় সমস্যা আমরা তৈরি করেছি। তারা ভোটার হয়, জমি কেনে, দখল করে কাদের আশ্রয়ে, স্থানীয়রা এজন্য দায়ী।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আমরা আমাদের মানবিকতা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছি। এখন তাদের নিরাপদে ফিরে যাওয়ার বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। তাদের আসাতে আমাদের যে অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত সমস্যা তৈরি হয়েছে সেটি বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে হবে। এজন্য সুনির্দিষ্ট একটি টাস্কফোর্স তৈরি করতে হবে।
তিনি বলেন, এখন আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হলো বিলম্বে প্রত্যাবর্তন, বহুমাত্রিক নিরাপত্তা। রোহিঙ্গাদের কারণে সমস্যা তৈরি হচ্ছে এসিডিজির সূচকের। ঝুঁকিতে আছে স্বাস্থ্যখাত, শিক্ষাখাত, সামাজিক নিরাপত্তা। যারা ২০১৭ সালে এসেছে তার পরিসংখ্যান আছে। এরপরে যারা এসেছে তাদের পরিসংখ্যন কী আমাদের কাছে আছে। এখন সমস্যা সমাধানের একটাই পথ দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পাশাপাশি আমাদের বহুপাক্ষিক আলোচনা করতে হবে। যেখানে সব দেশের কাছে আমাদের বর্তমান সমস্যা নিয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যভিত্তিক পেপার উপস্থাপন করতে হবে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রুহুল আলম চৌধুরী বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদ আর বন্দর নগরী কক্সবাজারের আজ বেহাল দশা। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায় যারা সেখানে সবসময় বন্দি অবস্থায় ছিলো আজ তারা আমাদের এখানে উন্মুক্ত অবস্থা আছে। যার কারণে আমাদের নিরাপত্তা ঝুঁকির পাশাপাশি মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষার উপায় নেই। সব সমস্যা নিয়ে আইসিসির চলমান মামলায় আমাদের লড়তে হবে।
কক্সবাজার ফোরামের আহ্বায়ক ব্যারিস্টার মিজান সাঈদের সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দিন, সিনিয়র আইনজীবী আখতার হামিদ, সংগঠনটির সদস্য সচিব সুজন শর্মা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৯
ইএআর/জেডএস