তিনি বলেন, আমরা জঙ্গিদের মূল উৎপাটন করতে পারিনি। আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
এছাড়া গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে দেশে এ মুহূর্তে কোনো নাশকতার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
রোববার (২৮ জুলাই) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিদের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। এদেশের ভালো হোক বা দেশ এগিয়ে যাক এটা তারা চায় না। জঙ্গিরা মূলত বিদেশি নয়, তারা আমাদের দেশেরই লোক। বিভিন্ন নামে, বিভিন্নভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। আগেও ছিল এখনো বিভিন্ন নামে আত্মপ্রকাশ করে। এদের আর কোনো কাজ নেই। কখনো জিএমবি, কখনো নিউ জিএমবি কখনো আবার আনসারুল্লাহ বাংলাটিম। এখন আবার লোনুল নামে আরও একটি গ্রুপ সৃষ্টি করেছে। আমরা এখনো এদের বিস্তারিত পায়নি। তাদের মূল উৎপাটনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেষ্টা করছে।
পদ্মাসেতুসহ নানা বিষয়ে গুজব ছড়ানোকারীদের বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা পদ্মাসেতু চায় না, তারাই সেতুতে মাথা লাগবে বলে গুজব ছড়াচ্ছে। আমাদের দেশে যমুনা, মেঘনা, বুড়িগঙ্গাসহ অনেক বড় বড় সেতু নির্মাণ হয়েছে। যেগুলোর কোনটা চীন, কোনটা জাপানসহ অন্যান্য দেশ নির্মাণ করেছে। তখন তো মাথা লাগেনি। তবে এখন কেন? গুজব তুলে পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ করা যাবে না। জনগণ এদের বিশ্বাস করে না, কারণ তাদের গুজবে আস্থা আনে না। কারণ এটা হাস্যকর গুজব। পদ্মাসেতু নিদিষ্ট সময়েই হবে।
তিনি বলেন, গুজব তুলে বিভ্রান্ত করে দেশকে পিছিয়ে দিতে চায়। এদেশ এগিয়ে যাক ভালো হোক অনেকে চায় না। স্বাধীনতার বিরোধীরা আমাদের দেশের ক্ষতি করার জন্য নানা কর্মকাণ্ড করে থাকেন। এ পর্যন্ত বিভিন্ন গুজব ছড়ানোর দায়ে ১শ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা বিদেশে থেকে দেশের বিরুদ্ধে গুজব তুলছেন তাদেরও চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
প্রিয়া সাহা বক্তব্য নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা দেশের সংখ্যালঘুদের বিষয়ে যে তথ্য দিয়েছেন, তা তার ব্যক্তিগত মতামত। এনিয়ে দেশের ইমাম এবং মুসলিম ধর্মীয় নেতারা যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। এদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। এ সম্প্রীতি কেউ নষ্ট করতে পারবে না।
১৫ আগস্ট ও ঈদুল আজহায় নাশকতার তথ্য নেই জানিয়ে তিনি বলেন, কোন দিবসকে কেন্দ্র করে নাশকতা যেন না ঘটে সেজন্য গোয়েন্দাসহ সব বাহিনী সজাগ রয়েছে। সব দিবস যাতে সুষ্ঠুভাবে পালিত হয়, সে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা ঈদুল আজহা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার বিষয়েও আলোচনা করেছি। বন্যার কারণে রেললাইন, বড় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলো ঈদের আগেই মেরামত করা যায় কিনা সেই ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে সকাল ৬টায় জাতির জনকের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের নেতারা। এরপরে সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো ও দোয়া পড়া হবে। সেখান থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস, মেডিক্যাল টিম সজাগ থাকবে। আর আয়োজন যেন সুষ্ঠুভাবে হয় সেদিকে নজর থাকবে। আর শোক দিবসে সরকারি-বেসরকারিসহ সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা,জুলাই ২৮, ২০১৯/আপডেট: ১৬১২ ঘণ্টা
জিসিজি/এএটি