বুধবার (২৮ আগস্ট) সচিবালয়ে বাংলাদেশ ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের নেতাদের সঙ্গে সভায় তথ্যমন্ত্রী একথা বলেন।
তথ্যসচিব আবদুল মালেক ছাড়াও সংগঠনের সভাপতি রেজোয়ানুল হক ও সদস্য সচিব শাকিল আহমেদের নেতৃত্বে এসময় অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ শ্রম আইনের সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মী আইনের বিষয় রয়েছে সেগুলো সমাধান করা প্রয়োজন। সেটি সহসা হবে, হলে পরে সেটি আবার মন্ত্রিসভায় নিয়ে যেতে পারবো। মন্ত্রিসভা হয়ে পার্লামেন্টে যাবে। একটি আইন তৈরি করা সহজ কাজ নয়, আর গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট আইন করা আরও সহজ নয়। যেহেতু এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর, সবকিছু বিবেচনা করে দেখেশুনে করতে হয়। নানা মন্ত্রণালয় এর সঙ্গে যুক্ত, সেজন্যই সময় লাগছে।
বাংলাদেশে এখন ৩৩টি চ্যানেল অনএয়ারে আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ছয়টি খুব সহসাই অনএয়ারে আসবে। এখানে কয়েক হাজার গণমাধ্যমকর্মী ও সাংবাদিক রয়েছেন। এই মাধ্যমের সঙ্গে যারা যুক্ত তারা তাদের সমস্ত কল্যাণ করার জন্য সরকার সব সময় আপনাদের সঙ্গে আছে এবং থাকবে।
সম্প্রচার নীতিমালা সরকার করেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সম্প্রচার আইনও খুব সহসা পার্লামেন্টে নিয়ে যেতে পারবো বলে আশা করছি।
আইন হলে সম্প্রচার কমিশন হবে। গণমাধ্যমকর্মী আইন ও সম্প্রচার আইন পাস করিয়ে যদি সম্প্রচার কমিশন করতে পারি তাহলে এক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
গণমাধ্যমকর্মী আইন হলে তার আলোকে টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিকদের জন্য নতুন নীতিমালা তৈরির সুযোগ তৈরি হবে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে বেতন-ভাতা পরিশোধের বিষয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, কেউ যদি আইন না মানে তাহলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ থাকে। আমি অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়েছি। ভবিষ্যতেও সহযোগিতায় থাকবো। তবে গণমাধ্যমকর্মী আইন পাস হলে আইনি বাধ্যবাধকতার মধ্যে থাকবে মালিকপক্ষ, সবাই।
‘সুতরাং সে ক্ষেত্রে হঠাৎ করে কাউকে ছাঁটাই করে দেওয়া বা কারও পাওনা পরিশোধ না করার বিষয়গুলো আর থাকবে বলে…, যখন আইন পাস হবে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকবে তখন আমার মনে হয় সুরাহা হবে। ’
ইতোমধ্যে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে অনেক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আগে বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোকে সিরিয়ালি পাওয়া যেত না, এখন সিরিয়াল সারাদেশে মানা হচ্ছে। আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি, ভবিষ্যতেও পরিচালনা করা হবে। মোবাইল কোর্ট ঘোষণা দিয়ে পরিচালনা করবো না, যখন প্রয়োজন পড়বে তখন করা হবে। যারা আইন অমান্য করবে, দেশের স্বার্থ বিঘ্নিত করবে সেখানে আইন প্রয়োগ করা হবে।
তিনি বলেন, টেলিভিশন সাংবাদিকদের নানা সময়ে বেতন-ভাতা নিয়মিত না পাওয়া, সবক্ষেত্রে না হলেও অনেক ক্ষেত্রে হচ্ছে সেটি। এটির অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে টেলিভিশনগুলোর আয় কমে গেছে। সেই কথা বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশের যে বিজ্ঞাপনগুলো বিদেশে চলে যাচ্ছিল সেগুলো পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। একটি দু’টি কোম্পানি এখনও প্রদর্শন করছে তবে সেই সেই কোম্পানিগুলো সেই দেশের নিবন্ধনকৃত। তারপরও তাদের আমরা চিঠি দিয়েছি।
তথ্যমন্ত্রী জানান, আইন অনুযায়ী পুরোপুরি ক্লিনফিড যাতে বিদেশি চ্যানেলগুলো আমাদের দেশে পাঠায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছে। অ্যাটকোর নেতারা প্রসঙ্গটির অবতারণা করেছেন। সেটির ব্যাপারেও একটু সময় লাগবে কারণ ডিজিটালাইজড করার একটা ব্যাপার আছে। তবে খুব বেশি সময় আমরা দিতে চাই না, আইন সবাইকে মানতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রচারের ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশন খুব সহসা করতে হবে, সেজন্য আমরা প্রয়োজনে একটি টাস্কফোর্স গঠন করবো। সম্প্রচার মাধ্যম যাতে সমগ্র দেশে ডিজিটালাইজড হয়। তাহলে পুরোপুরি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৯
এমআইএইচ/এএ