ঢাকা, রবিবার, ২৬ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

নির্বাচনের আগে জাল ভোট বিতর্ক সিলেট চেম্বারে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯
নির্বাচনের আগে জাল ভোট বিতর্ক সিলেট চেম্বারে সিলেট চেম্বারে জাল ভোটার নিয়ে অভিযোগ। ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: নির্বাচনের আগে আবারও সিলেট চেম্বার অব কমার্সের ভোটার তালিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের মালিক সাজিয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ উঠেছে। 

এ ইস্যুতে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) চেম্বারের নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ করেছেন এক ব্যবসায়ী।

নগরের আম্বরখানা বরকতিয়া সুপার মার্কেটের কলি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সিরাজ উদ্দিন লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনি চেম্বারের নিয়মিত সদস্য।

২০১৯-২১ সালের হালনাগাদ তালিকায় তার ভোটার নম্বর-৮৮৪। কিন্তু, ২১ সেপ্টেম্বর তার পরিবর্তে সুভাস চন্দ্র সেন নামে একজনকে ভোটার করা হয়েছে। কোনো প্রার্থী ব্যক্তিগত সুবিধা নিতে প্রতারণামূলক এ কাজ করেছেন। সিলেট চেম্বারে প্রশাসক থাকার পরেও এ ধরনের ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।  

ব্যবসায়ীরা জানান, কলি ট্রেড সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী হিসেবে উল্লেখিত সুভাস চন্দ্র সেন চৌধুরী সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সদ্য বিদায়ী সভাপতি খন্দকার শিপার আহমদের মালিকানায় ‘শিপার এয়ার সার্ভিস ট্রাভেল এজেন্সি’র ম্যানেজার। অনেক ব্যবসায়ী তাকে ব্যক্তিগতভাবেও চেনেন-জানেন। কিন্তু, প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তাকে ভোটার বানানোর হীন চেষ্টা পুরো ভোটার তালিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

এ বিষয়ে সিলেট চেম্বারের নির্বাচনী বোর্ডের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন খান বাংলানিউজকে বলেন, ওই ব্যবসায়ী তার প্রতিনিধির মাধ্যমে অফিসে অভিযোগের কপি দিয়েছেন। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) তাকে ডেকে বসা হবে।

তিনি বলেন, সাধারণত ভোটার তালিকায় অনেকেই প্রতিনিধি দিয়ে থাকেন। নয়তো, তার ট্রেড লাইসেন্স, টিআইএন সার্টিফিকেট পাওয়ার কথা নয়। তাছাড়া খসড়া তালিকা যখন প্রকাশ করা হয়েছিল, তখন ব্যবসায়ীদের দেখার দরকার ছিল তার নামের জায়গায় অন্য কেউ অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন কি-না।  

তার মতে, ট্রেড লাইসেন্স প্রক্রিয়া সবখানে ডিজিটাল না হওয়ায় অনেক জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে। ডিজিটাল হলে একটিও জাল সনদ মিলতো না।

সিরাজ উদ্দিনের বদলে ভোটার তালিকায় নাম এসেছে সুভাস চন্দ্র সেনের।  ছবি: বাংলানিউজ

জানা গেছে, একইভাবে আরও কয়েকশ’ জাল ভোটার রয়েছে চেম্বার অব কমার্সের ভোটার তালিকায়। শুধু সুভাস চন্দ্র সেন নন, খন্দকার শিপার আহমদের মালিকানা প্রতিষ্ঠান নগরের সুবিধবাজার রেইবো গেস্ট হাউসের ব্যবস্থাপক রামিম, শিপার এয়ারের কর্মচারী দিরাজ রায়, হাবিবুর রহমানকেও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।

সিলেট চেম্বার অব কমার্সের ভোটার তালিকায় গত কয়েক বছর থেকেই জালভোটার করা নিয়ে অভিযোগ উঠছে। ফলে, এ বছরের ২৭ এপ্রিল নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও ভোটার তালিকায় গলদ ইস্যুটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এ নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি দৈব চয়নে ৪০ শতাংশ জাল ভোটার করার সত্যতা পায়। এ কারণে, বিতর্ক নিয়ে বিদায় নেন সদ্য সাবেক পর্ষদ। ফলে, মামলা জটিলতায় প্রায় পাঁচ মাস পিছিয়ে যায় নির্বাচন। এ অবস্থায় সিলেট চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রশাসকের নেতৃত্বে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয় গত ৮ আগস্ট।

নতুন তালিকায় মোট ভোটার ২ হাজার ৪৬৫ জন। এর মধ্যে অর্ডিনারি ক্যাটাগরিতে ১ হাজার ৪১৩ জন, অ্যাসোসিয়েটে ১ হাজার ৪০ জন, গ্রুপে ১১ জন ও টাউন অ্যাসোসিয়েশনে এক জন।  

আগামী ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। চারটি গ্রুপে অর্ডিনারি ক্যাটাগরিতে জনপ্রতি ১২টি ভোট, অ্যাসোসিয়েটে ছয় ভোট, গ্রুপে তিন ভোট ও টাউন ক্যাটাগরিতে একটি ভোট দিতে পারবেন ভোটাররা।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৯
এনইউ/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।