ঢাকা, রবিবার, ২৬ মাঘ ১৪৩১, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বেত ছুড়ে মারলেন শিক্ষক, চোখের আলো হারাচ্ছে শিশু হাবিবা!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৯
বেত ছুড়ে মারলেন শিক্ষক, চোখের আলো হারাচ্ছে শিশু হাবিবা! আহত হাবিবা আক্তার। ছবি: বাংলানিউজ

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ সদর উপজেলার যাদবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের বেতের আঘাতে হাবিবা আক্তার (৮) নামে একটি শিশুর চোখ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় ওই শিশুকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাবিবা যাদবপুর গ্রামের শাহিন মিয়ার মেয়ে এবং ওই স্কুলের ৩য় শ্রেণির ছাত্রী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুর ১২টার দিকে ক্লাস চলাকালে সহকারী শিক্ষক নিরঞ্জন দাশ তার হাতের একটি বেত ছুড়ে মারলে তা সরাসরি হাবিবার চোখে লাগে। এতে তার চোখ থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়।

পরে সমগ্র স্কুলে হৈ চৈ শুরু হলে স্থানীয় লোকজন হাবিবাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মিঠুন রায় পরীক্ষার পর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সিলেটে নিয়ে যেতে বলেন। পরে তার স্বজনরা হাবিবাকে ঢাকা চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে যান।

হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মিঠুন রায় জানান, বেতটি সরাসরি হাবিবার চোখের ভেতর আঘাত করায় তার চোখ খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চোখটি ভাল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

এ ব্যাপারে সহকারী শিক্ষক নিরঞ্জন দাশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়া নিচ্ছিলাম। এ সময় যারা পড়া পারছিলনা তাদের টুকটাক বেত্রাঘাত করি। কিন্তু ওই ক্লাসের দরজার সামনে কিছু শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে হৈ চৈ করছিল, আমি তাদের বারবার ধমক দিলেও তারা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকলে হাতে থাকা বেত ছুড়ে মারলে তা গিয়ে হাবিবার চোখে লাগে। এটি আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল। ওই ছাত্রীকে আমি চিকিৎসার জন্য সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি। যত ভাল চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তা আমি করাবো।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুক আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাখাওয়াত হোসেন রুবেল বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, আমরা বিষয়টি শুনেছি। এখন বিস্তারিত তথ্য নেওয়ার এবং খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি।

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের বেত নিয়ে যাওয়া এবং এ ধরনের ঘটনা কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, বেত দিয়ে আঘাত করার তো বিধানই নেই। শুধু তাই নয় শ্রেণিকক্ষে বেত নিয়ে যাওয়ারও অনুমতি নেই। যদি কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ