মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী চিড়িয়াখানা ঘুরে বন্যপ্রাণীদের নিঃসঙ্গতার এমন করুণ চিত্র দেখা যায়। একাকী অবস্থায় ইতোমধ্যে কয়েকটি প্রাণী মারাও গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গীবিহীন এসব প্রাণীর মধ্যে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। নিঃসঙ্গতার কারণে প্রাণীগুলো অস্বাভাবিক আচরণ করছে, দীর্ঘমেয়াদী বিষণ্নতার দেখা দিয়েছে কারণে নানাবিধ শারীরিক সমস্যাও। এখন আর তাদের মধ্যে নেই স্বাভাবিক চঞ্চলতা-উৎফুল্লতা।
মিরপুর চিড়িয়াখানায় একশৃঙ্গ গন্ডার, ভাল্লুক, ডোরাকাটা হায়েনা, কেশোয়ারী ও গ্রেটার কুডুর সঙ্গী নেই বহুদিন ধরে। আবার, কিছু প্রাণীর একই লিঙ্গের সঙ্গী থাকলেও নেই বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গী।
বন্যপ্রাণী গবেষক ও বিশেষজ্ঞো বলেন, আমাদের দেশে চিড়িয়াখানায় সাধারণত বন্যপ্রাণীদের খাঁচায় বন্দি রাখা হয়। সেখানে একে তো উন্মুক্ত পরিবেশের অভাব, তারপর যদি কোনো সঙ্গী না থাকে, তাহলে সেই প্রাণীর মতো দুর্ভাগা আর কেউ নেই!
চিড়িয়াখানায় নিঃসঙ্গ প্রাণীদের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ নূরজাহান সরকার বাংলানিউজকে বলেন, চিড়িয়াখানায় কোনো প্রাণী একা হয়ে গেলে দ্রুত তার সঙ্গীর ব্যবস্থা করতে হয়। সঙ্গীবিহীন বেশি দিন থাকলে সে হতাশাগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে, এতে তার স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হয়। প্রাণীটিকে দীর্ঘদিন নিঃসঙ্গ অবস্থায় রাখা এক ধরনের অপরাধ। এভাবে রেখে তার ওপর চরম অন্যায় ও অবিচার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, কোনো প্রাণীর সঙ্গী না থাকলে দেশ-বিদেশের কোনো চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্কের সঙ্গে চুক্তি করে প্রাণী বিনিময়ের মাধ্যমে সঙ্গী জোগাড় করা যায়। অথবা বৈধভাবে প্রাণী কিনেও এ সমস্যার সমাধান করা যায়।
সূত্র জানায়, বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও নিঃসঙ্গ প্রাণীগুলোর সঙ্গী জোটাতে ব্যর্থ হয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. এস এম নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা গত এক বছর ধরে প্রাণীগুলোর সঙ্গী জোগাড়ের চেষ্টা করছি। ভারত ও দুবাইয়ের চিড়িয়াখানার সঙ্গে কথা হয়েছে। বন্যপ্রাণী বিনিময়ে তারাও আগ্রহী। এ দুই দেশের সঙ্গে বিনিময় না হলেও এ বছর নতুন প্রাণী কেনার সময়ে আমরা নিঃসঙ্গগুলোর সঙ্গীর ব্যবস্থা করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯
আরকেআর/একে