অটোরিকশার মালিক ও শ্রমিকেরা জানান, অনেকেই ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছেন। এটি দিয়েই তাদের সংসার চলে, চলে বৃদ্ধ মা-বাবার ভরণপোষণ।
বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার সব সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও হলুদ ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করে বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) থেকে ব্যাপক মাইকিং ও প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ।
বরিশাল বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোপলিটন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যানজট নিরসন ও জনসাধারণের চলাচল নিরাপদ-নির্বিঘ্ন করতে উচ্চ আদালতের নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং হলুদ ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় প্রথম ধাপে আগামী ১ অক্টোবর থেকে জিলা স্কুল মোড় থেকে জেলখানা মোড়, কাকলীর মোড় থেকে সিটি করপোরেশনের মোড় হয়ে সেটেলমেন্ট অফিস মোড়, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মোড় থেকে গির্জামহল্লা হয়ে ফলপট্টির মোড়, ভাটারখাল ক্রসিং থেকে ডিসি অফিস গেট, সিটি করপোরেশনের মোড় ও ফলপট্টির মোড় হয়ে চকেরপুল পর্যন্ত হলুদ ইজিবাইক চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কয়েকটি ধাপে বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার সব সড়কেই ব্যাটারিচালিত রিকশা ও হলুদ ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করা হবে বলে জানিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ। এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের লক্ষ্যে এরই মধ্যে বিএমপির পক্ষ থেকে নগরে মাইকিং ও প্রচার-প্রচারণা করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) লাইসেন্স নিয়ে নগরে ২ হাজার ৬১০টি ব্যাটারিচালিত হলুদ ইজিবাইক চলাচল করে। তবে, বাস্তবে নগরে চলাচলরত ইজিবাইকের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। এছাড়া, প্যাডেলচালিত রিকশা চলাচলের অনুমতি থাকলেও এর লাইসেন্স লাগিয়ে নগরে চলাচল করছে হাজারখানেক ব্যাটারিচালিত রিকশা। নগরে থ্রি-হুইলারখ্যাত অসংখ্য প্যাডেল রিকশা, মাহিন্দ্রা ও সিএনজিও চলছে অবাধে।
বিসিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ব্যাটারিচালিত রিকশার কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এগুলো চলাচলে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। তবে, জনবলের অভাবে এসব অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।
অবৈধ এসব যানবাহন যে হারে চলছে, তাতে নগরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকায় যানজট নিরসনে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিসংখ্যান বলছে, নতুন এসব যানবাহন তৈরির পর বিভিন্ন এলাকা থেকে মূল শহরে প্রবেশ করছে। ফলে, নগরে যানজটের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। তাছাড়া, এসব যানবাহনের চালকেরাও দক্ষ নয়। তারা যথাযথভাবে ট্রাফিক আইন মানছেন, এতে ঘটছে দুর্ঘটনা।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, এসব যানবাহনে থাকা ব্যাটারিগুলো চার্জ দিতে হয়, যা বাণিজ্যিক মিটারের আওতায় পড়বে। তবে, এ নিযমও ঠিকভাবে মানা হচ্ছে না। নগরের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা ছোট-বড় অসংখ্য গ্যারেজে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ থাকারও অভিযোগ রয়েছে। বিগত সময়ে অভিযান চালিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ এ ধরনের প্রমাণ পেয়েছে ও চার্জিং মেশিনসহ নানা সরঞ্জাম জব্দ করেছে।
এ বিষয়ে বিএমপির উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) মো. খায়রুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর যানজট নিরসন ও জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন-নিরাপদ করার লক্ষ্যে উচ্চ আদালতের আদেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং হলুদ ইজিবাইক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রথম ধাপে, নগরের প্রাণকেন্দ্র ঘিরে বেশ কয়েকটি সড়কে আগামী ১ অক্টোবর থেকে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। পরে পর্যায়ক্রমে মেট্রোপলিটন এলাকার অন্য সব সড়কে এসব যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হবে। জনগণের ভোগান্তি লাঘবেই পর্যায়ক্রমে এসব যানবাহন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯
এমএস/একে