ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

রঙ-তুলির আঁচড়ে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯
রঙ-তুলির আঁচড়ে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি প্রতিমার গায়ে রঙের আঁচড় দিচ্ছেন একজন প্রতিমাশিল্পি। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: শুভ্র শরতে এবার মেঘমেদুর বরষা। বৃষ্টিসিক্ত আবহাওয়ায় আজ পার হচ্ছে মহালয়া। বলা হয়, শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা। মূলত শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে দেবীপক্ষের শুরু। শনিবার থেকে দুর্গাপূজার ক্ষণগণনা শুরু হয়ে গেছে। অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভ শক্তি প্রতিষ্ঠায় মর্ত্যে আসবেন দেবী দুর্গা। ভোরে মহালয়ার ঘট স্থাপন, বিশেষ পূজা আর মন্দিরে মন্দিরে শঙ্খের ধ্বনি ও চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে আবাহন জানানো হয়।

তাই আর মাত্র কয়েকদিন পরেই ঢাকে কাঠি পড়বে। শুরু হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।

রাজশাহীজুড়ে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। দিন-রাত এক করে এখন রঙ আর তুলির আঁচড়ে শেষ রূপায়নের কাজ করছেন প্রতিমাশিল্পিরা। আগামী ৪ অক্টোবর বোধনের মধ্য দিয়ে দশভূজা দেবী দর্শন দেবেন তার অজস্র ভক্তকে।

ধূপ, ধুনুচি আর ঢাকের তালে ক’দিন পরেই মেতে উঠবে রাজশাহী। ইতোমধ্যে দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে মণ্ডপ সাজানো ও নতুন জামা-কাপড় কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন রাজশাহীর সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষ।

সনাতন ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি অনিল কুমার সরকার জানান, এবার রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় এবার ৩ হাজার ২৮২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হবে। রাজশাহী জেলায় এবার পূজামণ্ডপের সংখ্যা ২৪৭টি। আর মহানগর এলাকায় প্রস্তুত করা হচ্ছে ৭৬টি পূজা মণ্ডপ।

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজশাহীর প্রতিটি মণ্ডপ ও মন্দিরকে সরকার ৫০০ কেজি করে চাল দেবে। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ২/৩ দিনের মধ্যে এই চাল বিতরণ করা হবে বলে জানান সনাতন ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অনিল কুমার সরকার। প্রতিমার গায়ে রঙের আঁচড় দিচ্ছেন একজন প্রতিমাশিল্পি।  ছবি: বাংলানিউজতাই রাজশাহী মহানগরীর সব মণ্ডপেই এখন শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে। দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে প্রতিমা ও প্রত্যেকটির বিভিন্ন অনুষঙ্গ তৈরি, নিখুঁতভাবে কাজ ফুটিয়ে তোলা এবং রঙয়ের কাজে ব্যস্ত সময় কাটছেন প্রতিমাশিল্পিদের। যেনো ঘুম নেই পাল বাড়িতে। প্রাপ্তি যোগের আশায় মনের আনন্দে চলছে পার্বণের জোর প্রস্তুতি।   

মহানগরীর আলুপট্টির প্রতিমা নির্মাতা কার্তিক চন্দ্র পাল বাংলানিউজকে বলেন, আষাঢ়ের নয় তারিখ থেকে তারা প্রতিমা তৈরি শুরু করছেন, কাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু প্রতিমাগুলোর নকশা ঠিক করা হচ্ছে। আগামী দু’দিনের মধ্যেই দুর্গা প্রতিমাগুলোতে চূড়ান্ত রঙ লাগিয়ে পোশাক পরিচ্ছদে সুসজ্জিত করা হবে বলে যোগ করেন তিনি।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বাংলানিউজকে জানান, শারদীয় দুর্গা পূজা সৌহার্দের সঙ্গে ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য এবার তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থ গ্রহণ করা হয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশকে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পূজা শুরু প্রথম দিন থেকে প্রতিমা বিসর্জনের দিন পর্যন্ত পুলিশ সর্তক অবস্থায় থাকবে।

এদিকে দেবীর বোধন থেকে প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসবকে আনন্দঘন করতে এবার ব্যাপক নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে রাজশাহীজুড়েও।

দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কোনো হুমকি নেই বলে জানিয়ে পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব শুরুর দিন থেকে বিজয়া দশমীর দিন (৮ অক্টোবর) পর্যন্ত রাজশাহীর আট জেলায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মালম্বী মানুষ যেন তাদের দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারেন তার জন্য সচেষ্ট থাকবে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৯
এসএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।