ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বন্দিদের হাসপাতালে নিতে কেনা হচ্ছে ৬৮ অ্যাম্বুলেন্স

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯
বন্দিদের হাসপাতালে নিতে কেনা হচ্ছে ৬৮ অ্যাম্বুলেন্স

ঢাকা: বর্তমানে গড়ে প্রায় ৮ থেকে ১০ শতাংশ বন্দিকে প্রতিদিন জেল থেকে হাসপাতাল ও কারাগার থেকে কোর্টে আনা-নেওয়া করতে হয়। দেশের ৬৮টি কারাগারেই কারা হাসপাতাল রয়েছে। অসুস্থ বন্দিদের প্রাথমিকভাবে কারা হাসাপাতালে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারা হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় গুরুতর অসুস্থ এবং বিশেষ রোগে আক্রান্ত বন্দিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালে জরুরি ভিত্তেতে ভর্তি করা হয়।
 
অথচ ৬৮টি কারা হাসপাতালের জন্য অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে মাত্র ১৭টি, যা প্রয়োজনের তুলনায় কম।

এসব বিবেচনায় ৬৮টি অ্যাম্বুলেন্স কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।  
 
কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বাংলাদেশে ৬৮টি কারাগার রয়েছে। যার মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ৫৫টি জেলা কারাগার। কারা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে কারাগারের ধারণক্ষমতা ৪০ হাজার ৬৬৪ জন হলেও এর বিপরীতে আটক বন্দি রয়েছেন ৮৮ হাজার ২০০ জন।  

যা ধারণক্ষমতার ২ গুণের অনেক বেশি। নানা কারণে গড়ে ১০ শতাংশকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। কারাবন্দিদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কারা অধিদপ্তর এ উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে।  
 
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৬৮টি অ্যাম্বুলেন্স কিনতে প্রতিটার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ লাখ টাকা। অ্যাম্বুলেন্সসহ মোট ১০৫টি যানবাহন কেনা হবে। এখাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। ১৮ লাখ টাকা ব্যয় করে ৬টি সিরিমনিয়াল এসকর্ট মোটরসাইকেলও কেনা হবে। ২টি প্যারেড রিভিউ ভেহিক্যালে ব্যয় হবে তিন কোটি টাকা।  

এছাড়া ৩০ আসনের দুটি মিনিবাস, ১২ আসনের দুটি মাইক্রোবাস, দুটি প্রিজনার্স ভ্যান ও একটি প্রিজনার্স এসকট আর্মড ভেহিক্যাল কেনা হবে।
 
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ‘অ্যাম্বুলেন্স, নিরাপত্তা সংক্রান্ত গাড়ী ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কারা অধিদপ্তরের আধুনিকায়ন’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ৪৯ কোটি ৬ লাখ ৫ হাজার টাকা ধরা হয়েছে।  

চলতি সময় থেকে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে সমগ্র বাংলাদেশে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। কারা অধিদপ্তরসহ কারাগারগুলো দক্ষ পরিচালনা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের কারাগার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করা হবে। বন্দিদের দক্ষ পরিচালনার স্বার্থে এবং কারা নিরাপত্তা বাড়াতে কারাগারের সক্ষমতা ও দক্ষ জনবল তৈরি করবে সরকার।  

তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে আধুনিক কারাগার ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োগিক মডিউল ও আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী বন্দি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতেই এ উদ্যোগ।  
 
কারা সদরদপ্তরের সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (অর্থ) সুরাইয়া আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, দেশে ৬৮টি কারাগার রয়েছে। বিপরীতে বন্দি আটক আছে ৮৮ হাজার ২০০ জন। গড়ে ৮ থেকে ১০ শতাংশ বন্দিকে কারাগার থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স নাই। ৬৮টি কারাগারে মাত্র ১৭টি অ্যাম্বুলেন্স আছে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পের আওতায় ৬৮টি নতুন অ্যাম্বুলেন্স কেনার পাশাপাশি কারাগারগুলোর আধুনিকায়ন করা হবে। প্রতিটা কারাগারে আমরা বন্দিদের আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সেবা নিশ্চিত করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯
এমআইএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।