ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

মাগুরায় প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯
মাগুরায় প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

মাগুরা: মাগুরায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ভায়না মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে। তাদের বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান মালিক-চালকরা।

গাড়ি চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যশোর থেকে ছেড়ে আশা যানবাহন ভিটাসাইর, ভায়না মোড়, ঢাকা রোড, পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের সামনে ও ছোট ব্রিজসহ বিভিন্নস্থান থেকে পণ্যবাহী যানবাহন থেকে টাকা আদায় করে ট্রাফিক পুলিশ। ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রতিটি পণ্যবাহী ট্রাক থেকে ১০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে থাকে।

বিশেষ করে দূরপাল্লার পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজির প্রধান টার্গেট। এছাড়া জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের আওতায় রয়েছে আরও পাঁচ শতাধিক যানবাহন। যার প্রতিটিকেই দৈনিক বা মাসিক চুক্তির আওতায় ট্রাফিক পুলিশকে টাকা দিতে হয়।

এস.বি সুপার ডিলাক্স পরিবহনের চালক কাশেম মোল্ল্যা বাংলানিউজকে বলেন, আমার গাড়ির সব কাগজপত্র ঠিক আছে। এরপরও প্রতিবার যাওয়া-আশার সময় ট্রাফিক পুলিশের চাঁদা দিতে হয়। না দিলে কোনো না কোনো কারণ দেখিয়ে মামলা দেয়। তাই হয়রানি থেকে বাঁচতে বাধ্য হয়ে টাকা দেই।

স্থানীয় ট্রাক চালক গাফার হোসেন, ইলিয়াস হোসেন ও কুদ্দুস মোল্ল্যা বাংলানিউজকে বলেন, মালিক সমিতির মাধ্যমে প্রতিমাসে গাড়ি প্রতি ৫০০ টাকা করে দিই। বিনিময়ে তাদের গাড়িতে স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই স্টিকার দেখলে ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি থামায় না।

মাইক্রোবাস চালক সুমন শিকদার বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের গাড়ি প্রতি ৫০০-৮০০ টাকা দিতে হয়। আবার অনেক সময় আমাদের লাভ হয় যে টাকা তার থেকে বেশি টাকা চলে যায় টোল দিতে। আমাদের কিছু থাকে না।

মাগুরা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইমদাদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে মাসিক চুক্তি থাকে। মাসিক টাকা দিলে কাগজ বা লাইসেন্স না থাকলেও সমস্যা নেই। আর না দিলে কাগজ থাকলেও ঝামেলা করে।

গাড়ি থেকে চাঁদা আদায়ের কথা জানতে চাইলে টিএসআই  মোস্তাফিজ বাংলানিউজকে বলেন, অনেক সময় গাড়ির কাগজপত্র চেক করতে হয়। যেসব গাড়ির কাগজপত্র নেই তাদের আইনের মাধ্যমে মামলা দেওয়া হয়।  

ভায়না মোড়ে মুদির দোকানে চাঁদার টাকা রাখে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক সময় ট্রাফিক পুলিশ চা খাওয়ার জন্য ওখানে বসে থাকে। তবে আগে চাঁদা নেওয়া হলেও এখন আর হয় না।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার খান মোহম্মদ রেজওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, গাড়ি থেকে অবৈধভাবে ট্রাফিক পুলিশ টাকা আদায়ের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। এ ধরনের ঘটনায় যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।