নূরন্নাহারকে তালাক দেওয়ার পর ওইদিনই তার মা মাজেদা বেগমকে (৪০) বিয়ে করে বাড়ি ফেরেন মোনছের আলী। এমন ঘটনা ঘটেছে গোপালপুর উপজেলার কড়িয়াটাআটা গ্রামে।
জানা যায়, ধনবাড়ী উপজেলার হাজরাবাড়ী পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলীর ছেলে মোনছের আলী গত ২ অক্টোবর গোপালপুর উপজেলার কড়িয়াটা গ্রামের নূর ইসলামের মেয়ে নূরন্নাহার খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরদিন শাশুড়ি মাজেদা বেগম মেয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। মেয়ের সঙ্গে এক সপ্তাহ সেখানে অবস্থানের পর শুক্রবার মেয়ে ও জামাতাকে নিয়ে নিজবাড়ি ফেরেন। শনিবার সকালে নূরন্নাহার মোনছেরের সঙ্গে সংসার করবেন না বলে বায়না ধরেন। শুরু হয় পারিবারিক কলহ।
শাশুড়ি মাজেদা বেগম তখন জানান, নূরন্নাহার সংসার না করলে তিনি নতুন জামাতার সঙ্গে সংসার করবেন। এ অবস্থায় অসহায় শ্বশুর নূর ইসলাম গ্রাম্য সালিশ ডাকেন। হাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের তালুকদার, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামসহ এলাকার গণ্যমান্যরা সালিশি বৈঠকে বসেন।
সামাজিক বিচারে মাজেদা বেগম ও মোনছের আলীকে মারধর করা হয়। এরপর পুরো পরিবারের সম্মতিতে নূর ইসলাম প্রথমে স্ত্রী মাজেদা বেগমকে তালাক দেন। এরপর বর মোনছের আলী নববধূ নূরন্নাহারকে তালাক দেন। এরপর একই অনুষ্ঠানে সবার উপস্থিতিতে মোনছের আলীর সঙ্গে মাজেদা বেগমের এক লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে হয়। হাদিরা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী জিনাত এসব কাজে যুক্ত ছিলেন।
কাজী জিনাত জানান, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রাম্য মাতব্বর এবং ওই পরিবারের সব সদস্যের সম্মতিতে দুটি তালাক এবং একটি বিবাহের কাজ একই অনুষ্ঠানে সম্পন্ন করা হয়।
ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, পুরো কাজটি হয়েছে ওই পরিবারের সম্মতিতে। তবে শাশুড়ি বিয়ে করার ঘটনায় আপত্তি থাকায় গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে মোনছের ও মাজেদাকে শারীরিক শাস্তি দেওয়া হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের তালুকদার বাংলানিউজকে জানান, শাশুড়ি বিয়ের খবরে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী বাড়ি ঘেরাও করে মারধর শুরু করে। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পরিবারের সবার সম্মতির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তিনি বিয়ের সম্মতি দেন।
এদিকে, শাশুড়িকে বিয়ের খবর ছড়িয়ে পড়লে বহুমানুষ ভিড় করছে মোনছের আলীর বাড়িতে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৯
এনটি