একই সঙ্গে মামলার তৎকালীন তদন্তকারী দুই কর্মকর্তা এবং সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইজিপিকে নির্দেশ ও বাবলু শেখকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইফুর রহমান সিদ্দিক এ রায় ঘোষণা করেন।
নাটোর জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ২০০১ সালের ১৫ এপ্রিল নাটোর সদর উপজেলার গাঙ্গইল গ্রামে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় কাজী আবদুল মালেক বাদী হয়ে শ্রী বাবুসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে নাটোর সদর থানায় ১৮ এপ্রিল একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সিংড়া উপজেলার আচল কোট গ্রামের শ্রীদেব দাসের ছেলে বাবুকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়।
তৎকালীন নাটোর সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মমিনুল ইসলাম ওই শ্রী বাবুকে অভিযুক্ত করে ১৫ মে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। পরবর্তী সময়ে একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর পুনরায় বাবুকে অভিযুক্ত করে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হেলেনা পারভীন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামি বাবুকে গ্রেপ্তার না করে ইয়াকুব আলীর ছেলে বাবলু শেখকে ২০০২ সালের ৭ নভেম্বর গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এ ভুলের বিষয়টি আদালতকে অবহিত না করে ৬ দিন পর ১৩ নভেম্বর আসামির আইনজীবী লুৎফর রহমান বাবু ওই পরিচয়েই বাবলু শেখের জামিন করান। পরে একই পরিচয়েই বাবলু শেখের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন, সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামি পরীক্ষা করেন।
যুক্তিতর্ক শেষে ২০১৬ সালের ২৩ জুন মুখ্য বিচারিক হাকিম মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকী আসামি বাবুর বিরুদ্ধে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। ওই দিন কাঠগড়া থেকে বাবলু শেখকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি একই বছরের ১৬ আগস্ট আপিলের মাধ্যমে জামিনে বের হন।
এ বিষয়ে নাটোর দায়রা জজ আদালতে আপিল করা হলে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাইফুর রহমান সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি বিচারের জন্য পাঠানো হয়। মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে বিচারক বাবলু শেখকে মামলা থেকে অব্যাহতির নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) মোমিনুল ইসলাম ও উপ পরিদর্শক (এসআই) হেলেনা পারভীনের সঠিকভাবে তদন্ত না করার অপরাধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের আইজিপিকে নির্দেশ দেন।
পর্যবেক্ষণে মামলার ফরোয়ার্ডিং কর্মকর্তা তৎকালীন নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা প্রমাণিত হয়। মামলায় আরও বলা হয়, বাবলু শেখের সাজা ভোগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। এ বিষয়ে সঠিক দায়িত্ব পালনের জন্য রায়ের কপি বার কাউন্সিলের সভাপতি- সেক্রেটারি বরাবর পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৯
এসএইচ