বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে মোহাম্মদপুরের টাউন হলের পাশে অবস্থিত এসএফএক্স গ্রিন হেরাল্ড ইন্টারন্যাল স্কুলের সামনে নির্মিত দেশের প্রথম ‘পুশ বাটন টাইম কাউন্ট-ডাউন সিগনাল’সহ জেব্রা ক্রসিংয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পুশ বাটন লাইটের উদ্বোধন প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, প্রত্যেকটা কাজের পেছনে একটা উদ্দেশ্য থাকে।
তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। তিনি আমাকে পুশ বাটন ও জেব্রা ক্রসিংয়ের কথা বলেছেন। এই লাইট লাগানোর আইডিয়াটা প্রধানমন্ত্রীর। আমরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে এটাকে বাস্তবায়ন করছি।
মেয়ের আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা সিটি করপোরেশন থেকে অনেক কাজ করি। কিন্তু সেটা স্থায়ী হয়না। আমি এই স্কুলের অথরিটির কাছে সবিনয় অনুরোধ করবো, তারা যেনো এটাকে রক্ষণাবেক্ষণ করে। স্কুল অথরিটিও আমাদের পুশ বাটন লাইটটি রক্ষণাবেক্ষণের সহযোগিতা করবে বলে আমাকে আশ্বাস দিয়েছে।
উত্তর সিটির মেয়র বলেন, আমরা সবাই দেশের নাগরিক। তবে আমরা কি সুনাগরিক? সুনাগরিক হতে হলে আমাদেরকে নির্দিষ্ট কিছু আইন মেনে চলতে হবে। আইনগুলো যদি আমরা সঠিকভাবে মেনে চলতে পারি, তাহলেই আমরা সুনাগরিক। আমি লক্ষ করেছি কেন যেন এই আইন মানতে জনগণের মধ্যে এক ধরনের অনীহা কাজ করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে আমাদেরকে সুনাগরিক হয়ে উঠতে হবে।
নাগরিকদের বিভিন্ন বদ অভ্যাসের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আমরা লক্ষ করি অনেকেই গাড়ির গ্লাসটা নামিয়ে রাস্তার ওপরেই ময়লা ফেলে দেয়। যেকোনো জায়গায় আমরা যেকোনো ধরনের ময়লা ইচ্ছামতো ফেলি। অথচ এই আমরাই বিদেশে গিয়ে যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলিনা। আমাদের এই মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, শিক্ষক এবং বাবা-মা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ। আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন শিক্ষকরা বকা দিলে মন খারাপ হয়ে যেত। জীবনের এই পর্যায়ে এসে বুঝেছি, তাদের বকা দেওয়াটা আমাদের ভালোর জন্যই। সুতরাং শিক্ষকদের এবং পিতা-মাতাকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে। কারণ তারা চায় আমরা একজন ভালো এবং আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠি।
আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, আজকে আমি আরও একটি ঘোষণা দিতে চাই, ঢাকা শহরে আমরা ১৫টি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করেছি। এই ফুটওভার ব্রিজগুলোতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এস্কেলেটর বসানো হচ্ছে। আমার অনুরোধ থাকবে, সবাই যেন ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করে।
গ্রিন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রিন্সিপাল সিস্টার ভার্জিনিয়া আশা গোমেজের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই, পুলিশের ডেপুটি কমিশনার জসিম উদ্দিন মোল্লা, উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়রের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌফিক জাহিদুর রহমান, ‘স্মার্ট ট্রাফিক লাইট সিস্টেম’র স্থপতি সারাক রউফ চৌধুরীসহ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা।
আলোচনা সভার শুরুতে স্কুল প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিদের ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
আলোচনা সভা শেষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে বেলুন উড়িয়ে পুশ বাটন লাইট ও জেব্রা ক্রসিংয়ের উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৯
আরকেআর/এসএ