ঢাকা, সোমবার, ৬ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অভিজিৎ হত্যা

সহকর্মীর ফোন পে‌য়ে ঘটনাস্থলে যান ড. অজয় রায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
সহকর্মীর ফোন পে‌য়ে ঘটনাস্থলে যান ড. অজয় রায়

ঢাকা: বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অ‌ভি‌জিৎ রা‌য়ের ওপর হামলার বিষয়টি ঢাকা বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ের (ঢাবি) একজন শিক্ষকের মাধ্যমে জানতে পারেন তার বাবা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক প্রফেসর ড. অজয় রায়। এরপর ছোট ছেলে অনু‌জিৎ রায়কে নিয়ে ঘটনাস্থ‌লে যান তিনি। এরপর অ‌ভি‌জিৎ ও তার স্ত্রী‌কে ঢাকা মে‌ডি‌কে‌ল কলেজ হাসপাতালে নি‌য়ে যান তারা। সেখা‌নে ওইদিন রা‌তেই মারা যান অ‌ভি‌জিৎ।

সোমবার (২৮ অ‌ক্টোবর) সন্ত্রাসবি‌রোধী বি‌শেষ ট্রাইব্যুনা‌লের ভারপ্রাপ্ত বিচারক জেস‌মিন আরা বেগ‌মের আদাল‌তে ঘটনার বর্ণনা দেন অভিজিৎ হত্যা মামলার সাক্ষী ড. অজয় রায়।

ত‌বে সেই শিক্ষকের নাম বা তার বিভা‌গের নাম বল‌তে পা‌রেন‌নি ৮৫ বছর বয়সী ঢা‌বির পদার্থ বিজ্ঞা‌ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষক।

আদালতে ‌তি‌নি ব‌লেন, আমার দুই ছে‌লে‌র ম‌ধ্যে অ‌ভি‌জিৎ ছিল বড়। সে খুবই মেধাবী ছিল। সে বু‌য়েটের মেকা‌নিক্যাল ই‌ঞ্জি‌নিয়া‌রিং বিভাগ থে‌কে পাস ক‌রে। প‌রে সিঙ্গাপু‌রে পিএইচ‌ডি করে। অ‌ভি‌জিৎ এর স্ত্রী যখন যুক্তরা‌ষ্ট্রের নাগ‌রিকত্ব পায় তখন সেখা‌নে কিছু‌দিন ছিল সে।

‌অজয় রায় ব‌লেন, অ‌ভি‌জিৎ‌কে মারার সময় তার স্ত্রী রা‌ফিদা আহ‌মেদ বন্যা বাঁচানোর চেষ্টা ক‌রে। এ সময় সন্ত্রাসীরা তা‌কেও আঘাত ক‌রে। এ‌তে তার স্ত্রীর ডান হা‌তের বৃদ্ধাঙ্গু‌লি বি‌চ্ছিন্ন হ‌য়ে যায়। সে প্রথ‌মে ঢাকা মে‌ডি‌কেল কলেজ হাসপাতাল ও প‌রে স্কয়ার হাসপাতা‌লে চি‌কিৎসা নেন।

‌আসা‌মিপ‌ক্ষে‌র আইনজীবীর এক প্র‌শ্নের জবা‌বে তি‌নি ব‌লেন, আমার ছে‌লে ধর্ম বা রাষ্ট্র‌বি‌রোধী কো‌নো লেখা‌লে‌খি করে‌নি। সে বিজ্ঞান বিষ‌য়ে লেখা‌লে‌খি কর‌তো।

সাক্ষ্যপ্রদা‌নের পর প্রথ‌মে আসা‌মি আবু সি‌দ্দিক সো‌হেলের প‌ক্ষে তার আইনজীবী এ‌বিএম খায়রুল ইসলাম লিটন অজয় রায়কে জেরা ক‌রেন। এরপর আরাফাত রহমা‌ন সিয়া‌মের প‌ক্ষে তার আইনজীবী মো. জা‌য়েদুর রহমান এবং মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক ও আকরাম হো‌সে‌নের প‌ক্ষে রাষ্ট্র‌নিযুক্ত আইনজীবী মোহাম্মদ জা‌কির হো‌সেনও তাকে জেরা ক‌রেন।

কো‌নো আইনজীবী না থাকায় আসা‌মি শ‌ফিউর রহমান ফারা‌বী নি‌জেই বাদীকে জেরা ক‌রেন। এরপর সাক্ষী ম‌সুদুর রহমান আদাল‌তে সাক্ষ্য দেন।  

তা‌কেও জেরা ক‌রেন আসা‌মিপ‌ক্ষের আইনজীবীরা। প্রথমদি‌নে এই দুজ‌নের সাক্ষ্যগ্রহণ শে‌ষে আদালত আগামী ১৮ ন‌ভেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহ‌ণের দিন নির্ধারণ ক‌রেন।

এ মামলার আসামিরা হলেন- বরখাস্ত হওয়া মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হোসেন ওরফে সাইমুম, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম, শফিউর রহমান ফারাবী, আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান।

এর ম‌ধ্যে পলাতক মেজর জিয়া ও আকরাম ছাড়া বা‌কি আসা‌মিরা আদাল‌তে উপ‌স্থিত ছি‌লেন।

এ মামলায় গত ১৩ মার্চ আদাল‌তে অ‌ভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এরপর গত ১ আগস্ট অ‌ভি‌যোগ গঠ‌নের মাধ্য‌মে বিচার শুরুর নি‌র্দেশ দেন আদালত।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে অভিজিৎকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে জখম করে। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  

এ ঘটনায় প‌রে অ‌ভি‌জি‌তের বাবা প্রফেসর ড. অজয় রায় বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় এক‌টি মামলা ক‌রেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
‌কেআই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।