ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভাড়াটিয়া সেজে লুট, অপহরণ করা হয় শিশুটিকেও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
ভাড়াটিয়া সেজে লুট, অপহরণ করা হয় শিশুটিকেও

ঢাকা: বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে গাজীপুরের বাসিন্দা শরিফপুরের আশরাফ আলীর বাসায় যান চারজন গার্মেন্টস কর্মী। ভাড়া নিয়ে আলাপের ফাঁকে ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস খাইয়ে আশরাফ আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের অজ্ঞান করে ফেলা হয়।

এরপর ঘরের নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটসহ আশরাফ আলীর ১৬ মাস বয়সী শিশু সন্তান আরাফকে অপহরণ করে নিয়ে যায় চক্রটি। এরপর ফোন করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়, অন্যথায় শিশু আরাফকে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।

পরিবারের এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিশুটিকে উদ্ধার অভিযানে নামে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-১) একটি দল। প্রথমে গাজীপুরের গাছা এলাকায় বিকাশে টাকা লেনদেনের সময় অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্য জেরিন ইশরাত জুলি (২২) ও তারিন নুশরাত তুলিকে (১৬) আটক করা হয়।

পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাইনবোর্ড এলাকার একটি বাসা থেকে অপহৃত শিশু আরাফকে উদ্ধারসহ অপহরণকারী চক্রের অপর দুই সদস্য আমিনুল ইসলাম (২৯) ও সুমনকে (৩০) আটক করা হয়।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর উত্তরায় র‌্যাব-১ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

তিনি বলেন, ১৬ জানুয়ারি গাজীপুর মহানগরীর শরিফপুরের আশরাফ আলীর বাসা ভাড়া নিতে যান জেরিন ইশরাত জুলি। বাসা পছন্দ হয়েছে জানিয়ে দুইদিন পর শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে জুলি তার ছোট বোন তারিনকে নিয়ে অগ্রিম ভাড়া দেওয়ার জন্য যান। এ সময় আলাপচারিতার ফাঁকে আশরাফ আলীসহ পরিবারে সবাইকে ঘুমের ওষুধ মেশানো জুস খাইয়ে দেন।

এক পর্যায়ে সবাই অজ্ঞান হয়ে পড়লে জুলি ও তারিন আশরাফ আলীর ১৬ মাস বয়সের শিশু আরাফকে অপহরণ করে এবং বাসার নগদ টাকা, স্বর্ণলংকার ও মোবাইলফোন চুরি করে পালিয়ে যায়।

পরে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পাশের বাসার লোকজন এসে তাদের কাছের একটি হাসপাতালে ভর্তি করে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শনিবার বিকেলে সুস্থ হওয়ার পর আশরাফ আলী জানতে পারেন শিশু আরাফ নিখোঁজ।

তখন অপহরণকারীরা চুরি করা ভিকটিমের মায়ের মোবাইলফোন থেকে ফোন করে আরাফকে মুক্ত করতে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব-১ অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের আটক করে এবং শিশু আরাফকে উদ্ধার করে।

আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি জানান, তারা একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণ, চুরি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তারা সবাই পেশায় গার্মেন্টস কর্মী। তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল গাজীপুর শহরে একটি ফ্ল্যাট কিনে সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করার। আর এই স্বপ্ন পূরণের জন্যই তারা এই অপহরণ করেছে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
পিএম/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।