ঢাকা, সোমবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

করোনা মোকাবিলায় সক্ষমতা বাড়ছে রামেক হাসপাতালে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩১ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
করোনা মোকাবিলায় সক্ষমতা বাড়ছে রামেক হাসপাতালে

রাজশাহী: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য সক্ষমতা বাড়াচ্ছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আগামী দুই দিনের মধ্যে হাসপাতালের ৩০ নম্বর ওয়ার্ড ভবনটি করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বুধবার (২৫ মার্চ) রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ও হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা এবং সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ওয়ার্ডটি পরিদর্শন করেন।

এ ভবনের দ্বিতীয়তলায় রয়েছে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) এবং হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ)।

আর নিচতলায় রয়েছে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি এবং নিউরোসার্জারী বিভাগ। এখন সেখানে চিকিৎসাধীন রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে। দুই দিনের মধ্যে সেটি করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হবে।

পরিদর্শন শেষে রামেক হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে সবাই মিলে নেমেছি। দেশ এবং জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে সংকট মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের যে সামর্থ্য আছে সে অনুযায়ীই কাজ করতে হবে। কল্পনাপ্রসূত কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে লাভ নেই। বাস্তবতার ভিত্তিতে এগোতো হবে।

এখন আমরা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাই। মন্ত্রণালয় কথা বলবে, কিন্তু তার বাস্তব প্রতিফলন থাকবে না এটা হবে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে কথা এবং কাজের সামঞ্জস্য রাখতে হবে।

সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের এই ভবনটিকে করোনাভাইরাসের রোগীদের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব। হাসপাতালের প্রধান ফটক ব্যবহার না করেই পেছনের গেট দিয়ে এখানে রোগীদের আনা-নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। মূল হাসপাতালের সঙ্গে এটার কোনো সংযোগ থাকবে না। এখানে প্রায় ২০০ রোগীকে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে। অক্সিজেনের ব্যবস্থা আছে। আইসিইউ, এইচডিইউ রয়েছে। এখানে করোনা রোগীদের সর্বোচ্চ ভালো চিকিৎসা সম্ভব উল্লেখ করেন মেয়র।

এ সময় রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান জানান, এখন ৩০ নম্বর ওয়ার্ড ভবনটি প্রস্তুত করা হচ্ছে। যদি প্রয়োজন হয় অন্য ওয়ার্ডেও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। কারণ, সব রোগীর আইসিইউ বা এইচডিইউ লাগবে না। সাধারণ রোগীও থাকবে। তিনি জানান, এখানে এখন ১০টি আইসিইউ এবং ৮টি এইচডিইউ রয়েছে। এছাড়া সার্জারি রুমেও ৬টি আইসিইউ বেড রয়েছে।

রামেকের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী জানান, চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় হাসপাতালে এখন প্রায় ২৫০ পিপিই মজুত রয়েছে। আরও কিছু আসছে। আরও এক হাজার পিপিই জরুরি প্রয়োজন। তাহলে চিকিৎসকরা নিরাপদে কাজ করতে পারবেন। আর করোনা রোগ শনাক্তের জন্য খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে পিসিআর মেশিন আসছে। সঙ্গে একজন বিশেষজ্ঞও আসছেন। তারা মেশিনটি স্থাপন করে দিয়ে যাবেন এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হবে। তখন কিটও আসবে। আগামী দুই বা তিনদিনের মধ্যে এই কাজটি শুরু হবে।

এদিকে, রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য জানান, রাজশাহীতে এরই মধ্যে করোনা রোগীদের জন্য সংক্রমণ ব্যাধি (আইডি) হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি সিডিএম এবং ক্যান্সার হাসপাতালকেও করোনার চিকিৎসায় ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজশাহী শহরের তিনটি স্টেডিয়ামও প্রয়োজনে চিকিৎসাকাজে ব্যবহার করা হবে। তবে আজ পর্যন্ত কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। পুরো জেলায় নতুন করে বুধবার ৩৯৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
এসএস/এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।