জানা যায়, দুস্থ ও অসহায়দের জন্য সরকার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করেছে। এ কর্মসূচির আওতায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কেজিপ্রতি ১০ টাকা করে মাসে ৩০ কেজি চাল কার্ডধারীদের কাছে বিক্রির কথা ডিলারদের।
এ নিয়ে অনেকের মধ্যেই চরম অসন্তোষ দেখা দিলেও গত ১৫ এপ্রিল সরেজমিনে স্থানীয় সাংবাদিকরা গিয়ে কার্ডধারীদের দেওয়া চাল পরিমাপ করে দেখেন সেখানে কাউকে ২৬ কেজি আবার কাউকে ২৭ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।
কার্ডধারী জাহানারা খাতুন, ইউনুস, দেলোয়ার, জাহাঙ্গীর ও খালেকের চাল মেপে তখন এ অনিয়মের সত্যতা মেলে। এরপর বেশ ক’দিন চাল বিক্রি বন্ধ রাখেন ওই ডিলার। মাপে কম দেওয়া নিয়ে কেউ অভিযোগ করলে তার কার্ড বাতিলেরও হুমকি দেন বাদশা হাওলাদার।
গত দু’বছর এভাবেই ৩০ কেজির টাকা রেখে লোক বুঝে মাপে প্রত্যেককে ৩ থেকে ৬ কেজি চাল কম দিয়ে আসছেন তিনি।
জানা যায়, ওই ডিলার উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এম মতিউর রহমানের আপন ছোট ভাই হওয়ার কারণে তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপটে এসব অনিয়ম করে যাচ্ছেন।
এদিকে গত মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) রাতে ইউএনও হুসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ সরেজমিনে যান। কিন্তু ইউএনও সেখানে যাওয়ার খবর পেয়ে তিনি গা ঢাকা দেন এবং ঘটনাস্থলে তার ছেলে রনিকে গুদামের চাবিছাড়া পাঠান। এ কারণে গুদামে কি পরিমাণ চাল আছে তা তিনি দেখতে পারেননি। পরে ওই ঘরের মালিক ছালেক মিয়ার বসতঘরের পিছনের বারান্দায় ১৮ বস্তা ওএমএস এর চাল দেখতে পান তিনি।
এসময় প্রশ্ন করলে ওখানে বাদশা হাওলাদারের ছেলে স্থানীয় যুবলীগ নেতা রনি হাওলাদার বলেন, ২৪ জন কার্ডধারীর জন্য এই চাল রেখে দেওয়া হয়েছে।
বালিপাড়া ইউনিয়ন জেপির সভাপতি কবিরুল ইসলাম গাজী বলেন, ওএমএস’র চাল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ডিলার বাদশা হাওলাদার অনিয়ম ও কারসাজি করে আসছেন। তার ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ায় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
চণ্ডীপুর গ্রামের মনির মাতুব্বর নামে কার্ডধারী একজন জানান, তার নামে ওএমএস’র কার্ড হওয়ার পরও বিগত ২৩ মাস তিনি কোনো চাল পাননি। চাল নিতে এলে নানা অজুহাত দেখিয়ে বহুবার তাকে চাল না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে ডিলার বাদশা হাওলাদার বলেন, চাল বস্তার কারলে কম হয়। সেই ঘাটতি মেটাতেই আমাদের চাল দেওয়ার সময় সামান্য কিছু কম হয়।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে আনা অন্য সব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৪১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২০
এএ