ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আলোর মুখ দেখছে ঢাকা-সিলেট চারলেন, টাকা দিচ্ছে এডিবিই

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০২০
আলোর মুখ দেখছে ঢাকা-সিলেট চারলেন, টাকা দিচ্ছে এডিবিই ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: অবশেষে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নেই হচ্ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চারলেনে উন্নীত করার কাজ। ঢাকা-সিলেটের ২১৪ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার চারলেন নির্মাণে উন্নয়ন সহযোগীর সন্ধানে ছিল সরকার।

এরপর এডিবি তাদের তিন বছরের যে পরিকল্পনা করে, তাতে ঠাঁই পেয়েছে ঢাকা-সিলেট চারলেন প্রকল্প। অবশ্য দেশের অন্যতম মেগা প্রকল্পের আওতায় ২১০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে চিঠি দিয়েছিল অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। ৮৫ টাকা দরে এ অর্থ প্রায় ১৭ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা।

ওই প্রকল্পে ঋণ দিতে একমত বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী এডিবি। তাদের কাছ থেকে এখন আর কোনো ঝামেলা নেই। চলতি বছরেই ঋণচুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে। কারণ এখনও প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাব) চূড়ান্ত হয়নি।

এডিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় এডিবি এখন ঋণচুক্তি করতে প্রস্তুত। আশা ছিল, চলতি বছরেই ঋণচুক্তি হবে। কিন্তু এখনও ডিপিপি চূড়ান্ত হয়নি।

ঢাকা-সিলেট চারলেন প্রকল্পর ডিপিপির কাজ চলমান। পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হবে। এরপরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই এডিবির সঙ্গে ঋণচুক্তি হবে।

গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) কয়েকটি উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। এর আগে ‘ইম্প্রুভমেন্ট অব ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট রোড টু ফোরলেন হাইওয়ে অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন অব সার্ভিস লেন অন বোথ সাইড’ প্রকল্পের জন্য বৈদেশিক সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যে পিডিপিপি অনুমোদন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।

প্রকল্পটির অনুকূলে বৈদেশিক সহায়তা প্রাপ্তির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল ইআরডিকে। স্বল্পসময়েই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সহযোগী খুঁজে পেয়েছে ইআরডি।

মূল সড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যান চলাচলের জন্য পৃথক সার্ভিস লেন নির্মিত হবে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বাঁক সরলীকরণসহ অধিকমাত্রার ট্রাফিক বিবেচনায় এনে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগ নিশ্চিত করা হবে। শিল্প ও বাণিজ্যে গতিশীলতা আনতে এশিয়া হাইওয়ে নেটওয়ার্ক, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাত দেশের জোট ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) করিডোর, দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) করিডোরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে চারলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।

প্রকল্পের আওতায় পৃথক সার্ভিস লেনসহ সড়ক নির্মাণে অতিরিক্ত ৯৮৬ দশমিক ৪৭ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। এর জন্য মোট ব্যয় হবে চার হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণে কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত ইউটিলিটিও স্থানান্তর করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ৩২১টি আরসিসি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। কালভার্টগুলোর মোট দৈর্ঘ্য হবে প্রায় এক হাজার ৩৮১ মিটার। ছোট-বড় ৭০টি ব্রিজসহ থাকবে। থাকবে পাঁচটি রেলওয়ে ওভারপাস।

নতুন পরিকল্পনায় চারটি ফ্লাইওভার, ১০টি আন্ডারপাস, ৪২টি ফুটওভার ব্রিজ, তিনটি ট্রাক স্ট্যান্ড এবং দুটি রেস্টহাউস থাকবে সড়কটিতে। সিলেট চা উৎপাদনে ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল। বর্তমানে এখানে বড় বড় শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। সিলেটে রয়েছে বেশ কয়েকটি সিমেন্ট ও সার কারখানাও। সিলেটের পাথর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যায়। অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ প্রচুর তেল ও গ্যাসের খনি রয়েছে। এসব কারণে এডিবি অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে চারলেন। সার্বিক বিষয় মাথায় রেখেই প্রকল্পের ডিপিপি তৈরির কাজ করছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) চন্দন কুমার দে বাংলানিউজকে বলেন, এডিবি ঋণেই ঢাকা-সিলেট ফোরলেন বাস্তবায়ন হবে। বর্তমানে আমরা ডিপিপি তৈরির কাজ করছি। এরপরেই এডিবির সঙ্গে ঋণচুক্তি সই হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০২০
এমআইএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।