ঢাকা, সোমবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০ মহররম ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীতে দুর্যোগে কৃষি ও মৎস্য খাতে ক্ষতি ১৯৬ কোটি টাকা 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২০
রাজশাহীতে দুর্যোগে কৃষি ও মৎস্য খাতে ক্ষতি ১৯৬ কোটি টাকা 

রাজশাহী: ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, অতিবৃষ্টি, জলাবদ্ধতাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে রাজশাহীতে কৃষি ও মৎস্য খাতে চলতি বছর ১৯৬ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। করোনা ভাইরাস মহামারির কারণেও কৃষি ও মৎস্য উৎপাদনে পড়েছে বিরূপ প্রভাব।

 

রাজশাহীতে বন্যার কারণে ১০৭ হেক্টর পুকুরের ২৬২ মেট্রিক টন মাছ ও ৩ লাখ পোনা ভেসে গেছে। কৃষিতে উৎপাদিত প্রায় ১০ হাজার মেট্রিক টন ফসল প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে রাজশাহীর কৃষকরা মৎস্যখাতে ১৪৬ কোটি টাকা ও কৃষিখাতে ৫০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।  

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, করোনাকালীন অতিবৃষ্টি ও বন্যার প্রভাবে রাজশাহীর কৃষি আবাদে ৫০ কোটি বেশি ক্ষতি হয়েছে। বন্যা ও জলাবদ্ধায় রাজশাহীর তানোর, মোহানপুর, বাগামারা, পুঠিয়া উপজেলার কৃষকরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।  

গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বন্যা ও জলাবদ্ধায় রাজশাহীর তানোর, মোহনপুর ও বাগামারা উপজেলার ৬ হাজার ২১৬ জন কৃষকের আবাদ নষ্ট হয়ে প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।  

রাজশাহীর তানোর, মোহনপুর ও বাগামারা উপজেলার কৃষি বিভাগ জানায়, এই তিন উপজেলায় ৭৭ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ করা হয়েছিল। যার মধ্যে মোট উৎপাদন থেকে ১ হাজার ৪৯৬ দশমিক ২৬ মেট্রিক টন উৎপাদন নষ্ট হয়েছে। এছাড়া ২ হাজার ৫৬১ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদের মধ্যে নষ্ট হয়েছে ৫ হেক্টর জমির সবজি।  

এর আগে ৩ উপজেলায় ২৭ দশমিক ৫৮ হেক্টর জমির রোপা ও আউশের আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ৮ হাজার ৫৮০ দশমিক ৫৬ মেট্রিক টন উৎপাদন কমেছিল। রোপা আউশের আবাদে ৩০ কোটি ৮৯ লাখ ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। আবাদ নষ্ট হয়ে সবজিতে ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, পান বরজে ৮ কোটি ৮২ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ও মরিচের আবাদে ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছিল।  

অন্যদিকে রাজশাহী মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, রাজশাহীতে বন্যার কারণে ১০৭ হেক্টর পুকুরের ২৬২ মেট্রিক টন মাছ ও ৩ লাখ পোনা ভেসে গিয়ে ৪ কোটি ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পুকুরে অক্সিজেন স্বল্পতায় বিষক্রিয়া তৈরি হয়ে ১২ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন মৎস্য চাষিরা। এছাড়া করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে কারণে ১৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।  

জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অলক কুমার সাহা বাংলানিউজকে বলেন, চলতি বছর মাছ চাষিরা একের পর এক প্রতিকূলতায় অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। মৎস্য অফিস চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শের মাধ্যমে তাদের সহযোগিতা করেছে।  

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামছুল হক বলেন, কৃষি অফিস ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাধ্যমতে সহায়তা করেছে। কৃষকদের ভাসমান রোপা আমনের বীজতলা তৈরি করে ধান চাষিদের সহায়তা করা হয়েছে। বিনামূল্যে সার-বীজ বিতরণ করা হয়েছে। সরকারের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২০ 
এসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।