ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

বন্ধ পাটকল চালুসহ ৫ দফা দাবি শ্রমিক-কর্মচারীদের  

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২০
বন্ধ পাটকল চালুসহ ৫ দফা দাবি শ্রমিক-কর্মচারীদের  

রাজশাহী: দেশে থাকা সব সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বন্ধ পাট, সুতা এবং বস্ত্রকল আধুনিকায়ন করে অবিলম্বে চালুসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ।  

বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর একটি রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

 

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ ও পাটশিল্পের বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ নেতারা রাজশাহীতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ১৮ নভেম্বর বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা দেশের পাটশিল্প এলাকায় শান্তিপূর্ণ গণপদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, দেশের পাটশিল্প শ্রমিক-কর্মচারীরা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থান ও মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঐতিহ্যবাহী ভূমিকা পালন করে আসছে।  

কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় মুক্তিযুদ্ধের সুফল জাতীয়করণ হিসেবে প্রাপ্ত রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলা হচ্ছে।

অথচ জাতিসংঘের ৭৪তম অধিবেশনে প্লাস্টিক পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে প্রকৃতিবান্ধব পণ্য ব্যবহার বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। তার আলোকে পরিবেশ বিপর্যয় কমাতে উন্নত দেশগুলোতে ২০২২ সাল থেকে পাট ও তুলা জাতীয় পণ্যের ব্যবহার কয়েকগুন বেড়ে যাবে। যার ফলে বিশ্বব্যাপী পাটজাত পণ্যের বিপুল চাহিদার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।  

এই মহুর্তে ভারতের নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে রফতানি করার মত সামর্থ্য নেই। বাংলাদেশেরও বিদ্যমান মেশিনারিজ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কারখানা আধুনিকায়ন ও দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচালনা করা জরুরি। তা করা হলে, উন্নতমানের পাটপণ্যের উৎপাদন একই শ্রমশক্তি দিয়ে তিনগুন বৃদ্ধি করা সম্ভব। বিজেএমসির অধীনস্থ মিলগুলো বন্ধ হওয়ার পর ব্যক্তিমালিকানাধীন পাটকলই বাংলাদেশের একমাত্র পাটখাত। তবে ১৬ হাজার তাঁতের মধ্যে চালু আছে মাত্র ৬ হাজার তাঁত। আর বন্ধ রয়েছে ৬৪টি মিল। যার ফলে ক্রেতাদের মানসম্পন্ন পণ্যের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন বন্ধ করা পাট, সুতা ও বস্ত্রকল আধুনিকায়ন করে তা চালু করা খুবই প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন নেতারা।

তাদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- বন্ধ করা ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল আধুনিকায়ন করে চালু, উৎপাদন বাড়ানো, উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলে লাভজনক শিল্পে পরিণত করতে হবে। কর্মহীন ৫১ হাজার শ্রমিককে স্বপদে কাজে ফিরিয়ে আনতে হবে। সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন বন্ধ করা পাট, সুতা ও বস্ত্রকল আধুনিকায়ন করে অবিলম্বে চালু করতে হবে।  

এছাড়া সরকারি, অধিগ্রহণকৃত হস্তান্তরিত ও ব্যক্তি মালিকানাধীন পাটকল শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি অবিলম্বে ঘোষণা করা, বস্ত্রকল শ্রমিকদের জন্য ঘোষতি মজুরি কার্যকর করা, সবক্ষেত্রে শ্রম আইনের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা, বাংলাদেশ সংবিধান, জাতীয় শ্রমনীতি এবং আইএলও কনভেশন ৮৭ ও ৯৮ অনুসারে অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করাসহ শ্রম আইন সংশোধন করার দাবি জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সহিদুল্লাহ চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসান, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন রেজা জেনু, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন রাজশাহী জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল করিম অপু।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২০
এসএস/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।