ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

পুলিশ ফাঁড়ি বসবে রাজশাহীর দুর্গম চরে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
পুলিশ ফাঁড়ি বসবে রাজশাহীর দুর্গম চরে বক্তব্য রাখছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক। ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা রাজশাহীর দুর্গম চরের নাম 'মাজারদিয়া'। তবে এই এলাকাটি রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) আওতায়।

পদ্মা নদীর ওপারে থাকা এই চরে নানান ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে বিভিন্ন সময়। তবে মামলা-মোকদ্দমার তদন্ত ছাড়া চরটিতে আগে পুলিশের পা পড়ত না।

ফলে অপরাধীদের ধরতে এবং এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এখানে পুলিশের যাতায়াত বেড়েছে। তাই এই চরে এবার পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের ঘোষণা এসেছে।

রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে স্থানীয়দের দাবির মুখে এ ঘোষণা দেন। এ দিন বিকেলে তিনি বিট পুলিশিং সভায় যোগ দিতে পদ্মা পাড়ি দিয়ে স্বশরীরে ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া ওই চরে যান। ওই অনুষ্ঠানে আরএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ছাড়াও আরও ১১ জন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) চরে যান।

চর মাজারদিয়ার নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তব্য শেষেই চরটিতে পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। চর মাজারদিয়ায় পুলিশ ফাঁড়ি হলে রাজশাহীতে এটিই হবে প্রথম চরের কোন পুলিশ ফাঁড়ি। চর মাজারদিয়া রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড। এখানে প্রায় ১২ হাজার মানুষের বসবাস। চরটি রাজশাহী শহরের ওপারে।

বিট পুলিশিং সভায় এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন কুড়ান বলেন, মামলার তদন্ত ছাড়া আগে এই চরে পুলিশ আসত না। ফলে মাদক চোরাচালান বেড়েছিল। এখন সেটি অনেকটাই কমেছে। আমরা এখন এই চরে পুলিশ ফাঁড়ি চাই।

হরিপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শামিম হোসেন একই দাবি তুলে বলেন, ছোট-খাট বিষয় নিয়ে আমরা নদী পার হয়ে থানায় যেতে চাই না। এখানেই যেন সমাধান হয় তার জন্য পুলিশ ফাঁড়ি চাই।

পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিল বলেন, সীমান্ত ঘেঁষা এই চরে আগে প্রচুর মাদক চোরাচালান হতো। এখন কমেছে। কিন্তু বদনাম রয়ে গেছে। আমরা এই চরকে মাদকমুক্ত করতে চাই। সে জন্য একটা পুলিশ ফাঁড়ির দরকার। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা সেটি চাই।

সবার এই দাবির প্রেক্ষিতে আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, আমি ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট উপ-পুলিশ কমিশনারকে বলে দিয়েছি। জায়গা খোঁজা শুরু হবে। জায়গা পাওয়া গেলেই পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হবে। আমি আপনাদের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা পৌঁছে দিতে চাই। আরএমপির অন্য এলাকার মানুষ যে সুবিধা পায়, একই সুবিধা চরের মানুষও পাবে।

পুলিশ কমিশনার বলেন, নতুন করে কেউ মাদকে জড়াবেন না। যাদের সম্পৃক্ততা আছে তারা দূরে সরে আসুন। মাদক ব্যবসা করে একজনের লাভের জন্য রাষ্ট্রকে ধ্বংস করবেন না। চরে পাকা রাস্তা, চিকিৎসার ব্যবস্থা, সন্তানদের ভাল পড়াশোনার ব্যবস্থাসহ সব সুবিধা তৈরি করবো। চরের মাটি সোনার মাটি। ভাল ফসল আবাদ হয়। দয়া করে কেউ মাদকের সঙ্গে জড়াবেন না।

সভায় অন্যদের মধ্যে আরএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) সুজায়েত ইসলাম, উপ-কমিশনার রশীদুল হাসান, সাজিদ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন কাশিয়াডাঙ্গা জোনের উপ-কমিশনার আরেফিন জুয়েল। পরিচালনায় ছিলেন আরএমপির কর্ণহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার আলী তুহীন।

বাংলাদেশ সময়: ০০১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
এসএস/কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।