ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সীমিত পরিসরে রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২০
সীমিত পরিসরে রাজবন বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত চীবর দানোৎসব। ছবি: বাংলানিউজ

রাঙামাটি: করোনার সংক্রমণ রোধে রাঙামাটির বনবিহারে সীমিত পরিসরে কঠিন চীবর দানোৎসব পালন করা হয়েছে। ধর্মীয় এই অনুষ্ঠানটি প্রতিবছর দু’দিনব্যাপী করা হলেও এবার করোনার কারণে শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) দিনব্যাপী প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে শেষ করা হয় অনুষ্ঠান।

সকাল থেকে বুদ্ধমূর্তি দান, বস্ত্রলংকার দান এবং বিকেলে দেশ, জাতি এবং করোনার ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে প্রার্থনা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রার্থনার সমাপ্তি করেন, রাজবন বিহারের ধর্মীয় গুরু (অধ্যক্ষ) প্রজ্ঞালংকার মহাথেরো।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন- কাটাছড়ি বনবিহারের ধর্মীয় গুরু (অধ্যক্ষ) ইন্দ্রগুপ্ত মহাস্থিবির। বনবিহার উপাসক-উপসিকা কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, বিএনপির সাবেক উপমন্ত্রী মণিস্বপন দেওয়ান, রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমাসহ ধর্মপ্রাণ দায়ক-দায়িকারা।

বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গেরুয়া কাপড়কে বলা হয় চীবর। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে চরকায় সূতা কেটে, সূতা রং করে আগুনে শুকিয়ে সেই সুতায় তাঁতে কাপড় বুনে চীবর তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয় বলে এর নাম কঠিন চীবর দান। পার্বত্য এলাকার বৌদ্ধরা প্রাচীন নিয়মে এ উৎসব পালন করে থাকে।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এই অনুষ্ঠানটি এইবার সংক্ষিপ্ত করায় পূণ্যার্থীর ঢল ছিলো না। এছাড়া দেশ-বিদেশ থেকে পূণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের আগমন ঘটেনি এ বছর।

বনবিহার এর দায়ক-দায়িকা কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, করোনার কারণে সরকারি নির্দেশনা মেনে এই বছর দু’দিনের অনুষ্ঠান একদিনে শেষ করেছি। জেলার বাইরে দর্শনার্থীদের আসতে দেওয়া হয়নি। যারা অনুষ্ঠানে এসেছে তাদের অবশ্যই মাস্ক পড়তে বাধ্য করা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত: বৌদ্ধ শাস্ত্র মতে, দীর্ঘ আড়াই হাজার বছর পূর্বে গৌতম বুদ্ধের শিষ্য বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীবর তৈরির প্রচলন করেছিলেন। প্রতি বছর আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাবাস শেষে চীবর দান করতে হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সাল থেকে বুদ্ধের শিষ্য বিশাখা প্রবর্তীত নিয়মে রাঙামাটি রাজবন বিহারে ৪৫ বছর ধরে কঠিন চীবর দান উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে, জগতে যত প্রকার দান রয়েছে তার মধ্যে এ চীবর দানই হচ্ছে সর্বোত্তম দান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।