ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শাঁওইলের প্রতি হাটে চাদর-কম্বল বিক্রি হয় ৩ কোটি টাকার

কাওছার উল্লাহ আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২০
শাঁওইলের প্রতি হাটে চাদর-কম্বল বিক্রি হয় ৩ কোটি টাকার

বগুড়া: বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নশরৎপুর ইউনিয়নের শাঁওইল গ্রামে সপ্তাহের হাটবারে কম্বল-চাদর বিক্রি হয় প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকার।

রোববার (৬ ডিসেম্বর) বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নশরৎপুর ইউনিয়ন তন্তুবায় সমবায় সমিতির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান।


এছাড়া শীতের সময় বিতরণের জন্য সরকারিভাবে যেসব কম্বল কেনা হয়, তার সিংহভাগই শাঁওইল গ্রামে উৎপাদন করা হয় বলেও এসময় জানান তিনি।

জানা যায়, বগুড়ায় শাঁওইলসহ জেলার মোট ৫০টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত। ১৯৭৯-৮০ সালে শাঁওইল গ্রামে কয়েকজন ব্যক্তি কম্বল বানানোর তাঁত মেশিন স্থাপন করেন। এরপর থেকে দরিদ্র মানুষগুলো নিজেদের এ পেশার সঙ্গে যুক্ত করতে থাকেন। সময়ের ব্যবধানে গ্রামের পর গ্রাম ছড়িয়ে পড়ে তাঁত শিল্প। বর্তমানে এখানকার তৈরি কম্বল, চাদর, গামছা, তোয়ালেসহ নানা ধরনের বস্ত্র দেশের মধ্যে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছে। ১৯৮০ সালের পর থেকে এ গ্রামে হাট বসতে শুরু করে বৃহৎ পরিসরে।
বর্তমানে সপ্তাহের রোববার ও বুধবার হাট বসে শাঁওইলে। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত চারমাস এ ব্যবসার পিক সিজন চলে। এসময় প্রত্যেক হাটবারে কমপক্ষে তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। সিংহভাগ বিক্রি হয় কম্বল ও চাদর। বছরের বাকি সময় বেশি বিক্রি হয় সুতা। এ আট মাসে দিনে গড়ে প্রায় ১ কোটি টাকার বেচাকেনা হয়।

আদমদীঘি উপজেলার নশরৎপুর ইউনিয়ন তন্তুবায় সমবায় সমিতির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, শাঁওইল সারাদেশের মধ্যে একটি প্রসিদ্ধ বাজার। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা এ বাজারে কম্বল, চাদরসহ বিভিন্ন পণ্য কিনতে আসেন।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে আগে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে মুড়ইল এলাকায় এবং অধিক টাকা লেনদেনের জন্য ১৩ কিলোমিটার দূরে সান্তাহারে যেতে হতো। তখন ব্যবসায়ীদের ঝুঁকি নিয়ে ব্যাংকে আর্থিক লেনদেন করতে হয়েছে। এখন অর্থনৈতিক লেনদেনের সেই সমস্যা দূর হয়েছে। বর্তমানে বাজার এলাকায় বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা চালু হয়েছে। মাঝারী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে স্বল্প সুদে প্রায় চার কোটি টাকা আর্থিক ঋণ দিয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক। ফলে উপকৃত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা জানান, গ্রামের এ হাটের প্রধান প্রবেশ সড়ক অত্যন্ত সরু। পাশাপাশি সড়কটি আঁকাবাঁকা। ফলে এ সড়কে ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচলে পোহাতে হয় সমস্যা।
এছাড়া গ্রামের অনেক রাস্তাঘাট এখনও পাকা হয়নি। আবার অনেক রাস্তার কার্পেটিং উঠে নষ্ট হয়ে গেছে। এসব সমস্যগুলো সমাধানের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি কমবে। সেসঙ্গে এই এলাকা ব্যবসার দিক থেকে আরও উন্নত হবে বলেও জানান তারা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২০
কেইউএ/এইচএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।