ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গৌরবোজ্জ্বল সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস ৭ ডিসেম্বর

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২০
গৌরবোজ্জ্বল সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস ৭ ডিসেম্বর গৌরবোজ্জ্বল সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস ৭ ডিসেম্বর

সাতক্ষীরা: আজ ৭ ডিসেম্বর, গৌরবোজ্জ্বল সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এই দিন শত্রুমুক্ত হয় সাতক্ষীরা।

গৌরবগাথা এই দিনটির কথা মুক্তিকামী সাতক্ষীরাবাসীর স্মৃতিতে আজও অম্লান।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাতক্ষীরা জেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার মোশারফ হোসেন মশু জানান, দীর্ঘ নয় মাস পর ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর রাতেই পালাতে শুরু করে পাকবাহিনী। ৭ ডিসেম্বর ভোর হতেই মুক্ত হওয়ার সুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। এর আগে ১৯ ও ২০ নভেম্বর মুক্ত হয় শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ। সেখান থেকে পিছু হটে পাক বাহিনী পারুলিয়া ব্রিজের কাছে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।

তিনি বলেন, ১৬টি মুখোমুখি ও খণ্ড যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৭ ডিসেম্বর মুক্ত হয় সাতক্ষীরা। লে. বেগ, ক্যাপ্টেন হুদা, লে. আরেফিন, মেজর জলিলের বাহিনী সম্মুখ সমরে ঝাপিয়ে পড়ে। ৭ ডিসেম্বর ভোর বেলা মুক্তিযুদ্ধের সময় সংবাদ বাহক সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুরের ছাকুর কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে মাটিয়াডাঙ্গা ক্যাম্প থেকে ১৭ জনের গ্রুপ পুরাতন সাতক্ষীরা হয়ে সাতক্ষীরা কোর্ট চত্বরে পৌঁছায়। এ গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন আব্দুল মহিত খান চৌধুরি দুলু। সেখানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন আবু নাছিম ময়না। এ গ্রুপে ছিলেন বদরুল, জাহিদ, সাদেক, আবু নাছিম ময়না, আব্দুর রশিদ, আজি, মাহবুব, গফুরসহ অনেকে। মাটিয়াডাঙ্গা ক্যাম্পের মোস্তাফিজ, জজ, মঈদ খানসহ মুজিব বাহিনীর এ দলটি পরে চলে যান খুলনার কপিলমুনি যুদ্ধে। শহরের পশ্চিম দিক থেকে আট নম্বর সেক্টরের ক্যাপ্টেন শফিউল্লাহ ও ক্যাপ্টেন মাহবুবের নেতৃত্বে সোনা, আব্দুল্লাহ, রফিক, মান্নান শহরে প্রবেশ করে যশোরের মনিরামপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার হাসানুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, প্লাটুন কমান্ডার নাজমুলের নেতৃত্বে আখড়াখোলার রায়পুর থেকে মিজান, রশিদ, কাদের, দিলীপ, হাসান, মোর্জতা, আব্দার, নজরুলের গ্রুপটি সকাল ১০টায় সাতক্ষীরায় পৌঁছায়। মুজিব বাহিনীর উপ-অঞ্চল প্রধান কাজী রিয়াজের নেতৃত্বে আনোয়ার, লিয়াকত, শাহাবুদ্দিন, সরোয়ার, আব্দুর রশিদের দল সরাসরি বিনেরপোতায় যায়। এদিকে এফএফ বাহিনীর প্রধান স ম আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে ৬৫ জন মুক্তিযোদ্ধার দল কপিলমুনি যুদ্ধে যোগ দেন। গেরিলা কমান্ডের পদ্মা গ্রুপের প্রধান সুভাষ সরকারের নেতৃত্বে অতুল, সুশীল, বক্কার, কার্তিক, রমেশের দলটি মাগুরা যুদ্ধ শেষ করে কপিলমুনি পৌঁছায়। লে. (অব) রহমতুল্লাহ বীর প্রতীকের নেতৃত্বে পাইকগাছা হাতিয়াডাঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করে যুদ্ধ করেন কোকিল, আলফাজ, শফি, বজলু, মুজিবর ও গফফর। দীর্ঘ নয় মাসে পাক সেনাদের সাথে সাতক্ষীরা অঞ্চলে যে সকল যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল সেগুলো হলো- তার মধ্যে টাউন শ্রীপুর যুদ্ধ, ভোমরা যুদ্ধ, কাকডাঙ্গা যুদ্ধ, বসন্তপুর যুদ্ধ ও বেলেডাঙ্গা যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২০
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।