ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা অসাম্প্রদায়িক চেতনার ওপর আঘাত’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২০
‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা অসাম্প্রদায়িক চেতনার ওপর আঘাত’ সভায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারসহ অন্যরা

ঢাকা: কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার ওপর চরম আঘাত বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।  

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না।

বাংলাদেশের কথা চিন্তা করলে বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করতেই হবে। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেও যাদের মনোবাসনা পূর্ণ হয়নি আজ তারাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে। তারা এবং তাদের অনুসারীরাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে।

রোববার (৭ ডিসেম্বর) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘মুজিব শতবর্ষ ও নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের অগ্রগতি বিষয়ক এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

খাদ্যমন্ত্রী এসব স্বাধীনতা বিরোধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, তাদের এ ধরনের ঘৃণ্য কার্যকলাপ বাংলাদেশের মানচিত্রের প্রতি অবমাননা, বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার ওপর চরম আঘাত।

তিনি বলেন, জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু আরও বেশি শক্তিশালী। তার রেখে যাওয়া আদর্শ ও দিকনির্দেশনার ওপর ভর করেই তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের মধ্যে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করতে পেরেছেন।  

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে সভায় মন্ত্রী বলেন, জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা বিধানে বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মহান জাতীয় সংসদে ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন পাস হয় এবং ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। সাধন চন্দ্র জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সারাদেশে জনসচেতনামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজনের ওপর জোর দেন।

অনুষ্ঠানে মুজিব শতবর্ষ ও নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ৬৪টি জেলা, সব উপজেলা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ভোক্তা, খাদ্য নির্মাতা, নির্বাচিত সব পর্যায়ের প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে প্রচার-প্রচারণামূলক কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রচার-প্রচারণামূলক কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়। এ প্রেক্ষাপটে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ২৫টি উপজেলায় প্রচার কার্যক্রম এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রচার-প্রচারণা জোরদার করার মাধ্যমে জনগণের সচেতনতা বাড়ানোর জন্য এরইমধ্যেই সাভার উপজেলা ও নরসিংদী জেলায় ক্যারাভান রোড শো অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সালে ৫৭টি ও ২০২০ সালে ৩০টিসহ সর্বমোট ৮৭টি হোটেল-রেস্তোরাঁকে গ্রেড দেওয়ার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অধীনে বাজার মনিটরিং কমিটি জুলাই ২০২০ থেকে ৩০ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ৫২টি বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৫১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৬৮ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে।  

এছাড়া বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে উদ্ভাবনী কর্মসূচিতে গ্রেড পাওয়া হোটেল-রেস্তোরাঁসমূহকে অ্যাপভিত্তিক মনিটরিংয়ের (নজর) আওতায় আনার জন্য হোটেল কস্তুরির সঙ্গে পাইলটিং কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে সভায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জানান। এ অ্যাপসের মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ তার কার্যালয় থেকেই এ সমস্ত হোটেল-রেস্তোরাঁর রান্নাঘরের পরিবেশ মনিটরিং করতে পারবে। পর্যায়ক্রমে নজরের সম্প্রসারণ সারাদেশে করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।  

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সচিব আব্দুল নাসের খানসহ কর্তৃপক্ষের অন্য সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২০
জিসিজি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।