ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পৌর নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থীর তালিকায় বিদ্রোহীদের নাম!

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২০
পৌর নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থীর তালিকায় বিদ্রোহীদের নাম! খাগড়াছড়ি ও রামগড় পৌরসভার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা

খাগড়াছড়ি: কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে খাগড়াছড়ি ও রামগড় পৌরসভার জন্য আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য ৬ মেয়র প্রার্থীর নাম ঠিক করেছে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ। আগামী ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় খাগড়াছড়ি পৌরসভা এবং তৃতীয় দফায় রামগড় পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।


 
দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিতব্য খাগড়াছড়ি ও রামগড় পৌরসভা নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য যে ৬ জনের নাম কেন্দ্রে পাঠাচ্ছে আওয়ামী লীগ, তাতে গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়াদের নামও অর্ন্তভুক্ত থাকায় সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
 
জানা গেছে, গত ৫ ডিসেম্বর দুই পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাই সংক্রান্ত বিশেষ বর্ধিত সভা করেছে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ। শহরের কদমতলী এলাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শরণার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।
 
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, সম্ভাব্য প্রার্থীসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় খাগড়াছড়ি পৌরসভায় মোট ৭ জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানান।  

সভায় খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও রামগড় পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পরে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্য থেকে খাগড়াছড়ি পৌরসভার ৩ জন প্রার্থী ও রামগড় পৌরসভা থেকে ৩ জন প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে পাঠানোর বিষয়ে জানানো হয়। যেখানে বিগত সময়ের বিদ্রোহী প্রার্থীরাও ঠাঁই পেয়েছেন। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন তৃণমূল আওয়ামী লীগ।
 
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি পৌরসভার দলীয় প্রার্থী নির্বাচনের জন্য যে ৩ জনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে তারা হলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল ও আলোচিত বর্তমান মেয়র রফিকুল আলম।
 
অপরদিকে, রামগড় পৌরসভার যে ৩ জনের নাম কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে তারা হলেন, রামগড় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল আলম কামাল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ও বর্তমান মেয়র কাজী শাহজাহান রিপন। পরবর্তীতে কেন্দ্র সেখান থেকে একজন করে প্রার্থী নির্ধারণ করবে।
 
দলের মেয়র পদের এই তালিকায় খাগড়াছড়ি পৌরসভায় রফিকুল আলম ও রামগড় পৌরসভায় কাজী শাহজাহান রিপনকে যুক্ত করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেকে। কারণ খাগড়াছড়ি পৌরসভায় রফিকুল আলম বিগত দুই পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ছিলেন। ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তার বড় ভাই জাহেদুল আলমের পক্ষে সরাসরি নির্বাচনও করেন রফিকুল আলম।
 
এছাড়া নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে মূলধারার আওয়ামী লীগের সঙ্গে নানা বিরোধে জড়িয়েছেন। রফিকুল আলমের বাহিনীর হামলা মামলায় জর্জরিত হন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাবেদ হোসেন জানান, ‘এত কিছুর পর দল থেকে মেয়র রফিকুলের নাম কেন্দ্রে পাঠানো তৃণমূলের নেতাকর্মীদের জন্য সত্যিই কষ্টের। তাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে দলে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে।  
 
অন্যদিকে অনেকটা একই চিত্র রামগড় পৌরসভার। বিগত নির্বাচনে কাজী শাহজাহান রিপন রামগড়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপক্ষে দাঁড়ান। যার প্রভাব পড়ে রামগড় উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। এ নিয়ে রামগড় আওয়ামী লীগে বিরোধ দেখা দেয়।
 
দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী রামগড় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল আলম কামাল বলেন, রিপন দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে গতবার নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। তাছাড়া জননেত্রী বলেছেন এ সমস্ত ব্যক্তিকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হবে না। দলের তালিকায় তার নাম রাখা ঠিক হবে না। আমি নিজেও প্রত্যাশী। আশাকরি নেত্রী সঠিক প্রার্থী বাছাই করবেন।
 
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, দুই পৌরসভার ৬ জনের নামের তালিকা আমরা কেন্দ্রে পাঠাবো। তাদের জীবনবৃত্তান্তসহ অতীতের কর্মকাণ্ডগুলোও সংযুক্ত করবো। এরপর কেন্দ্র সিদ্ধান্ত দেবে কারা হবে দলীয় প্রার্থী। তবে আমাদের নেত্রী যাকেই দলীয় প্রতীক দেবেন আমরা সবাই তার জন্য কাজ করবো।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০২০
এডি/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।