ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

ঘুষ নয়, মোবাইল বেচার টাকা নিচ্ছিলেন ভাইরাল হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২০
ঘুষ নয়, মোবাইল বেচার টাকা নিচ্ছিলেন ভাইরাল হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা

রাজশাহী: রাজশাহী জেলা পুলিশের একজন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) দোকান থেকে টাকা নিচ্ছেন- এমন একটি ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রচার হয়।

ওই ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়- প্রকাশ্যেই ঘুষ নিচ্ছেন এএসআই হারুনুর রশীদ। তবে পুলিশি তদন্ত বলছে, ঘুষ নয়, ব্যক্তিগত লেনদেন ছিল তার। ঘুষ নয়, মোবাইল বিক্রির টাকা নিচ্ছিলেন তিনি।

পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক হারুনুর রশীদ রাজশাহীর বাগমারা থানার তাহেরপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর গত ৩ ডিসেম্বর তাকে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

এরপর বিষয়টি তিন দিনের মধ্যে তদন্তের জন্য রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সার্কেল সুমন দেবকে দায়িত্ব দেন পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন। মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতে খায়ের আলম বাংলানিউজকে জানান, তাহেরপুর বাজারের ‘মা টেলিকম’ নামের একটি মোবাইলের দোকানের মালিক তুহিনের কাছ থেকে এএসআই হারুনুর রশীদ টাকা নিচ্ছেন বলে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়। তবে তদন্তের সময় তুহিন জানিয়েছেন, এএসআই হারুন ঘুষ নেননি। মূলত তিনি তার একটি মোবাইল ফোন ওই দোকানে বিক্রি করেছিলেন। আর অন্য একটি ফোন কিনেছিলেন। সেই ফোন কেনাবেচার সময় হারুন দুই হাজার টাকা পান। সেই টাকাটিই তিনি নিয়েছেন। কিন্তু উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে এ ভিডিওটিকে ঘুষ নেওয়ার চিত্র বলে প্রচার করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, তাহেরপুর এলাকার দুই ব্যক্তি ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়েছেন। তদন্তে জানা যায়, যারা এ কাজটি করেছেন তাদের বিরুদ্ধেই চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। কিছু দিন আগে তারা একটি ক্লিনিকে চাঁদাবাজি করতে গিয়েছিলেন। তখন ক্লিনিকের মালিক পুলিশ ডাকেন। ওই দিন এএসআই হারুন সেখানে গিয়েছিলেন। তিনি চাঁদাবাজদের বকাঝকা করে বিদায় করেছিলেন। এ ঘটনার জের ধরে তারা পরিকল্পিতভাবে এএসআই হারুনের ভিডিওটি ছাড়েন।

পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চিহ্নিত দুই চাঁদাবাজ তুহিনের দোকানের কর্মচারী আশিকের কাছ থেকে সিসি ক্যামেরার ওই ভিডিও ফুটেজটি নিয়েছিলেন। বিষয়টি তুহিন নিজেও জানতেন না।  

তবে ভিডিওতে দেখতে পাওয়া টাকা লেনদেনের বিষয়টি ঘুষ নেওয়া বলে প্রতীয়মান না হলেও এএসআই হারুনুর রশীদকে পুলিশের পোশাক পরা অবস্থায় ধূমপান করতে দেখা গেছে। এটি শিষ্টাচার বহির্ভূত। পোশাক পরে প্রকাশ্যে ধূমপানের মতো শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজের জন্য এএসআই হারুনুর রশীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ইফতে খায়ের আলম।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২০ 
এসএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।